স্টেশন মাস্টার ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। সেদিন ডিউটিতে ছিলেন তিনি। ফোনে স্ত্রীর সঙ্গে কথাকাটাকাটি হচ্ছিল তাঁর। ফোন কাটার আগে তিনি বলেন, বাড়িতে গিয়ে কথা বলব ওকে!
এদিকে সেই সময় স্টেশন মাস্টারের রুমের মাইক্রোফোনটি অন করা ছিল। সেই ওকে শুনে তাঁর সহকর্মী ভাবেন যে হয়তো তাকেই ‘ওকে’ বলা হচ্ছে। এরপর তিনি মালগাড়ি নিয়ে সোজা মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় চলে যান।
ছত্তিশগড়ের মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় ওই মালবাহী ট্রেন সোজা চলে যা, যার ফলে ভারতীয় রেলের ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
এই ঘটনার জেরে বিবাহ বিচ্ছেদের লড়াইতে নেমে পড়েন ওই দম্পতি। আইনি লড়াই শুরু হওয়ার ১২ বছর পর সম্প্রতি তাদের বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করা হয়।
ঘটনাটি ঠিক কী হয়েছিল?
সেই রাতে স্টেশন মাস্টার, যিনি বিশাখাপত্তনমের বাসিন্দা এবং কর্তব্যরত ছিলেন, তাঁর স্ত্রীর সাথে তর্ক হয়েছিল, যার শেষে তিনি বলেছিলেন, আমরা বাড়িতে কথা বলব, ঠিক আছে?। তিনি বুঝতে পারেননি যে তাঁর মাইক্রোফোন চালু রয়েছে, এবং অন্যদিকে তাঁর সহকর্মী এই 'ওকে'কে মাওবাদী অধ্যুষিত অঞ্চলে মালবাহী ট্রেন পাঠানোর সবুজ সংকেত হিসাবে ভুল করেছিলেন।
সৌভাগ্যক্রমে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু নাইট টাইম নিয়ম ভাঙায় ভারতীয় রেলকে ৩ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হয়েছে।
এরপরই বিশাখাপত্তনমের পারিবারিক আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন তিনি। স্ত্রীও স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে মামলাটি তার নিজের শহর দুর্গে স্থানান্তরিত করতে সক্ষম হন যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন যে তার জীবন সংশয় হতে পারে, খবর হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে।
দুর্গ পারিবারিক আদালত তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন খারিজ করে দিলে সাসপেন্ডেড রেল আধিকারিক ছত্তিশগড় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। একটি ডিভিশন বেঞ্চ তার এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগকে 'মিথ্যা' বলে মনে করে বিবাহবিচ্ছেদ অনুমোদন করে।
এদিকে স্ত্রীকে বলা এই ওকে ও তার জেরে রেলের বিরাট বিপত্তি হতে পারত। তবে বড় কোনও দুর্ঘটনা সেদিন হয়নি। কিন্তু রেলের এর জেরে প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। তার জেরে আরও রেগে যান ওই স্টেশন মাস্টার। তিনি এরপর স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন। দীর্ঘ লড়াই হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদনকে মান্যতা দিয়েছে আদালত।