'ধূসর তালিকা'-য় কি থাকবে পাকিস্তান? সে বিষয়ে আগামী শুক্রবার সিদ্ধান্ত হবে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) প্লেনারি বৈঠকে। তবে তার আগে এফএটিএফয়ের বৈঠকে কড়া হুঁশিয়ারির মুখে পড়ল পাকিস্তান।
প্যারিসের বৈঠকে তুরস্ক ছাড়া বাকি ৩৮ টি দেশে কড়া ভাষায় পাকিস্তানকে জানিয়ে দেয়, এফএটিএফয়ের পরবর্তী প্লেনারি বৈঠকের (আগামী জুনে) আগে বাকি ১৩ টি অ্যাকশন প্ল্যান পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের মাথাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা ও তাদের দোষী সাব্যস্ত করা।
আরও পড়ুন : 'আমাদের বন্ধু হয়ে সন্ত্রাসে মদত দিতে পারবে না', পাকিস্তানকে আক্রমণ রাওয়াতের
কীভাবে আন্তর্জাতিক সংগঠনটির কার্যকরী প্রক্রিয়ায় ইসলামাবাদ রাজনৈতিক রং লাগাতে চাইছে, তা এফএটিএফ সদস্যদের সামনে তুলে ধরা হয় বলে জানান কূটনীতিবিদরা। সম্প্রতি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাথাথির বিন মহম্মদের বক্তব্য থেকেই সেই রাজনীতিকরণের খেলা আরও স্পষ্ট হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। এরদোয়ান জানিয়েছিলেন, কালো তালিকার বাইরে রাখতে পাকিস্তানকে সাহায্য করবে তুরস্ক। অন্যদিকে, ইসলামাবাদকে খোলাখুলি সমর্থন জানিয়েছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমেরও প্রশংসা করেন তিনি।
আরও পড়ুন : FATF-এর 'ধূসর তালিকা' থেকে বেরোতে পারে পাকিস্তান, চিন্তা বাড়বে ভারতের
এফএটিএফে এক প্রতিনিধি জানান, সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর, ভুল ও নির্বাচিত তথ্য ফাঁসের মাধ্যমে নিজের দেশের মানুষকেই বিভ্রান্ত করার প্রাণপণ চেষ্টা করছে পাকিস্তান। ভবিষ্যতে 'কালো তালিকা' ফাঁস এড়ানোর জন্য এফএটিএফের অ্যাকশন প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করার ভার রয়েছে পাকিস্তানের উপর। অর্থাৎ এখন পাকিস্তানের কোর্টে বল রয়েছে। ফ্রান্সের রাজধানী থেকে এক আধিকারিক বলেন, 'প্রাণপণ চেষ্টা সত্ত্বেও পাকিস্তান ধূসর তালিকায় থেকেছে এবং থাকবেও।'
আন্তর্জাতিক মঞ্চে চাপে পড়লেও ঘরোয়াভাবে মুখ বাঁচানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের তরফে প্রচার চালানো হচ্ছে, কোনও সদস্য দেশের সমর্থন ছাড়াই পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করতে গিয়ে বুধবার দু'বার মুখে পুড়েছে ভারতেক। হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রের খবর, পাকিস্তান দাবি করেছে, মাসুদ আজহারের (জইশ-ই-মহম্মদের মাথা) প্রসঙ্গটি তুলতে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু কোনও সমর্থন পায়নি। কারণ পাকিস্তান নিজেদের রিপোর্টে সেই বিষয়টি আগেই বলেছে। রিপোর্টে মাসুদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে পাকিস্তান দাবি করলেও নয়াদিল্লি একেবারে নির্দিষ্ট অবস্থানও তুলে ধরেছে।
আরও পড়ুন : ‘নিখোঁজ’ মাসুদ আজহার, বিশ্বমঞ্চে ভুয়ো পাক দাবির বিরুদ্ধে প্রমাণ দেবে দিল্লি
পাকিস্তানের তরফে আরও প্রচার চালানো হয়, এফএটিএফ সংক্রান্ত ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সংবাদমাধ্যমে ফাঁসের জন্য সভাপতির (এবার চিন) কাছে মুখ পুড়েছে ভারতের। কারণ এফএটিএফের প্রক্রিয়া গোপন রাখা হয়।