ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতি উইলিয়ামস সহ অন্যান্য ক্রুদের ফিরে আসার ব্যাপারটা কিছুটা দেরি হচ্ছে। জানিয়ে দিল নাসা। কিন্তু কবে তাঁরা ফিরবেন সেটা জানানো হয়নি। আমেরিকার স্পেস এজেন্সি নাসা এনিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সেকারণে কিছুটা দেরি হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
বোয়িং স্টারলাইনার নামক মহাকাশযানে তিনি গিয়েছেন। কিন্তু তাতে একাধিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেকারণেই কিছুটা দেরি হয়েছে। এদিকে জানা গিয়েছে সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর সহযাত্রী বুচ উইলমোর দুজনেই সেই আইএসএসে নিরাপদেই রয়েছেন। তাদের সঙ্গে আরও সাতজন ক্রু মেম্বার রয়েছেন।
সুনীতা গত ৫ জুন ISS-এ পৌঁছেছিলেন। এটা মোটামুটি ১০ দিনের একটা মিশন ছিল। কিন্তু সেটা দুবার করে সময় বৃদ্ধি করা হয়। এরপর হিলিয়াম লিকের কিছু ঘটনা হয়েছিল, তার জেরেও সমস্যা তৈরি হয়। সব মিলিয়ে নিরাপদেই রয়েছেন সুনীতারা।
নাসা জানিয়েছেন যে ক্রু মেম্বাররা স্টেশন ছেড়ে চলে আসতে চাননি। তাছাড়া অন্যান্য যে সমস্ত সাপ্লাই সেটা যথাযথই আছে। অগস্টের মাঝমাঝি পর্যন্ত এই স্টেশন সিডিউল খোলা থাকবে।
প্রাথমিকভাবে সুনীতা উইলিয়ামসের ১৪ জুন ফিরে আসার কথা ছিল। এটা বাতিল হয়ে যায়। এরপর নাসা জানিয়েছিল ২৬শে জুন ফিরে আসবেন তাঁরা। এটাও স্থগিত হয়ে যায়। তবে এখনও নতুন তারিখ কিছু ঘোষণা করা হয়নি।
এদিকে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে বোয়িং স্টারলাইনারের পৃথিবীতে ফিরতে দেরি হয়েছে, নতুন তারিখ ২৬ জুন, নাসার বাণিজ্যিক ক্রু প্রোগ্রাম ম্যানেজার স্টিভ স্টিচ জানিয়েছেন।
গত ৫ জুন নভোচারী বুচ উইলমোর ও সানি উইলিয়ামস কেপ ক্যানাভেরাল থেকে উৎক্ষেপণ করেন। তারা আইএসএসের সাথে ডক করতে সক্ষম হওয়ার সময়, চারটি হিলিয়াম লিক ছিল, পাশাপাশি এর ২৮ টি কৌশল থ্রাস্টারের পাঁচটি ব্যর্থতা ছিল।
ফিরে আসতে দেরি হচ্ছে কেন?
থ্রাস্টার ট্রাবল শুটিং এবং নির্ধারিত স্পেসওয়াকের কারণে মহাকাশযানটি ফেরত আসতে বিলম্ব হবে বলে জানিয়েছে সিএনএন। স্টিচের মতে, বিলম্ব 'আমাদের দলকে ডেটা দেখার জন্য আরও কিছুটা সময় দেবে, কিছু বিশ্লেষণ করবে এবং নিশ্চিত করবে যে আমরা সত্যিই বাড়িতে আসতে প্রস্তুত।
বোয়িংয়ের কমার্শিয়াল ক্রু প্রোগ্রামের প্রধান মার্ক নাপ্পি বলেন, 'আমরা এটিকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছি এবং এক্ষেত্রে স্টেশনে থাকা এবং আরও কাজ করার সুযোগ হিসেবে দেখছি। তিনি বলেন, আমরা সব সময় বলে আসছি এটি একটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন। আমরা কিছু জিনিস শিখতে যাচ্ছি। সুতরাং আমরা এখানে আছি।
নাপ্পি যোগ করেছেন যে হিলিয়াম লিকের বিষয়ে আরও তদন্ত করা দরকার এবং ডকিংয়ের সময় কিছু থ্রাস্টার কেন বন্ধ হয়ে যায় তা খুঁজে বের করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিকভাবে ফ্লাইটটি মাত্র আট দিনের জন্য নির্ধারিত ছিল।
এই ফ্লাইটটি উল্লেখযোগ্যভাবে বাণিজ্যিক ক্যাপসুলের প্রথম মানব মহাকাশযাত্রা। পরীক্ষা সফলভাবে শেষ হলে নাসা ও বোয়িংকে স্টারলাইনারের পূর্ণ সনদ দেওয়া হবে। এটি স্পেসএক্সের সাথে ঘন ঘন মিশনে বিকল্প হওয়ার অনুমতি দেবে যা নভোচারীদের আইএসএস-এ নিয়ে যাবে।
চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারিতে স্টারলাইনার-১ দিয়ে ছয়টি মিশন ওড়ার কথা রয়েছে বোয়িংয়ের। তবে এরই মধ্যে স্পেসএক্সের চেয়ে চার বছর পিছিয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি। স্পেসএক্স ২০২০ সালের মে মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নভোচারী বহন করে আসছে।
এদিকে পৃথিবীতে ফিরতে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় লাগবে উড়ানটির। এটি সম্ভবত নিউ মেক্সিকো বা উটাহের কোনও মরুভূমির সাইটকে লক্ষ্য করবে।