পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে ঘুরছেন পাকিস্তানের ভিক্ষুকরা। বিদেশে যাচ্ছেন ভিক্ষা করতে। ভিক্ষা করেই আয় হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ভিক্ষুকদের সঙ্গে পাক সরকারের চলমান দ্বন্দ্বের মধ্যে এমনই একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এমনিতেই ভিক্ষুকদের পাসপোর্ট বাতিলের খবরে বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় রয়েছে পাকিস্তান। এখন সেখানকার ভিক্ষুকের কাছ থেকেও লক্ষ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই ভিক্ষুকের কাছে একটি পাসপোর্টও রয়েছে, যাতে লেখা আছে যে তিনি বেশ কয়েকবার সৌদি আরবে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: (50 Lakh ITR Filings on Last Day: 'পরীক্ষার শেষ মিনিটে স্পিড বাড়ল হাতের', শেষ দিনে কত লোকে ফাইল করলেন ITR?)
ঘটনাটি ঘটেছে সারগোধা জেলায়
জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের পঞ্জবের সারগোধা জেলার খুশব রোডে এক ভিক্ষুক অচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন। পুরো বিষয়টি জানাজানি হয়েছিল তখনই। ভিক্ষুককে রাস্তার ধারে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে মানুষ পুলিশকে খবর দিলে, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভিক্ষুককে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। আর তারপরই তদন্ত করে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে তাঁর কাছ থেকে নাকি ৫ লক্ষ ৩৪ হাজার পাকিস্তানি রুপি পাওয়া গিয়েছে। ভারতীয় মুদ্রার হিসাবে, তা প্রায় ১,৬০,৫৪৪ টাকার সমান। ওই ভিক্ষুকের কাছ থেকে একটি পাসপোর্টও উদ্ধার করা হয়েছে। পাসপোর্টটি প্রমাণ দেয় যে তিনি বেশ কয়েকবার সৌদি আরবে গিয়েছেন। মূলত ভিক্ষা করার জন্যই তিনি আরবে যেতেন বলেও জানা গিয়েছে। যদিও, হাসপাতাল থেকে ছাড়ার পর তাঁর জিনিসপত্র তাঁকে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: (Khameni orders attack on Israel: ইরানের মাটিতে হামাস প্রধান খুন হতেই ইজরায়েলে হামলার নির্দেশ খামেনির)
এলাকার লোকজন পুলিশের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন যে ওই ব্যক্তি একই এলাকায় নিয়মিত ভিক্ষা করতেন। আসলে, পাকিস্তান এখন ভিক্ষুক গোষ্ঠীকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। পাকিস্তানে একটি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে, বিদেশী মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেছিলেন যে বিদেশে আটক ভিক্ষুকদের ৯০ শতাংশই পাকিস্তানি। ইরাকি এবং সৌদি রাষ্ট্রদূতরা রিপোর্ট করেছেন যে এই এত বেশি গ্রেফতারের কারণে তাঁদের কারাগারেও আর জায়গা নেই। সেনেট কমিটিকে সচিব আরও বলেছিলেন যে সৌদি আরবের মসজিদ আল-হারামে আটক হওয়া বেশিরভাগই পাকিস্তানি। ভিক্ষা করতে যাওয়ার জন্য তাঁরা উমরাহ ভিসা ব্যবহার করেছিলেন।
আর এই কারণেই, গত মাসে এ বিষয়ে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে পাক সরকার। দুই হাজারের বেশি ভিক্ষুকের পাসপোর্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে, দেশের অনেক ভিক্ষুকই উমরাহর অজুহাতে সৌদি আরব, ইরাক ও ইরানের মতো দেশে গিয়ে ভিক্ষা করেন, যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। এই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান সরকার।