গত সোমবার উত্তরবঙ্গের রাঙাপানি স্টেশনের কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তাতে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এছাড়াও আহত হয়েছিলেন ৪০ জন। দুর্ঘটনার পরেই জখমদের চিকিৎসায় যুদ্ধকালীন তৎপরতা দেখিয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা। জখমদের অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে রক্তের ব্যবস্থা তারা যেভাবে করেছেন তাতে মুগ্ধ হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। এরকম সাফল্যের জন্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজকে পুরস্কৃত করা হল।
আরও পড়ুন: সামনে এল বিস্ফোরক তথ্য, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার তদন্তে নয়া মোড়
শনিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের মুখ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান। উল্লেখ্য, ঘটনা দিনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। আর এবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রশংসা পাওয়ায় খুশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, তারা চেয়েছিলেন প্রতিটি প্রাণ বাঁচাতে। তাই ঘটনার দিন হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্স, সাফাই কর্মীরা এগিয়ে এসেছিলেন। তাদের এই উদ্যোগ ছিল অভাবনীয়। তাছাড়া, জুনিয়র চিকিৎসকরা যেভাবে রক্তের সংকট মেটাতে এগিয়ে এসে রক্তদান করেছিলেন তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। রাজ্যের এই স্বীকৃতি হাসপাতালকে আরই উৎসাহিত করবে বলেই মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা কবলে পড়ার পরেই মৃত এবং আহতদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটবর্তী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তখন পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এগিয়ে আসেন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে সকলেই। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আহতদের চিকিৎসার জন্য ১৩০ ইউনিট রক্তের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু, রক্তের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় তখন এগিয়ে আসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তারা প্রায় ৬৫ ইউনিট রক্তদান করেছিলেন। সেই রক্ত আহতদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়।
তাছাড়া তড়িঘড়ি আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ বেডের আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়। কোনওরকম সময় অপচয় না করেই আহতদের জীবন বাঁচাতে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে দ্রুত অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হয়। শুধু তাই নয়, আহতদের বাড়ি যাওয়ারও ব্যবস্থা করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের তরফে। তাই এই সাফল্যের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।