দিল্লির সুলতানপুরীর মর্মান্তিক ঘটনায় প্রাণ হারানো ২০ বছর বয়সি তরুণী রাজনীতিতে যোগ দিতে চাইতেন বলে জানিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বিধবা মা ও তিন ছোট ছোট ভাই বোনের দায়িত্ব পুরো একা কাঁধে সামলাতেন। মৃত তরুণী সমাজ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতেন বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। সমাজসেবা করতেই রাজনীতিতেও যোগ দেওয়ার ইচ্ছে ছিল তরুণীর। তবে সেই সব স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে গেল। বর্ষবরণের রাতে এক অভাবনীয় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি। মৃত তরুণী ক্লাস ৮ থেকে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কাজে নামেন। তিনি একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে কাজ করতেন। ১৭ বছর বয়সি বোন, ১১ ও ৭ বছর বয়সি দুই ভাই ও মায়ের সঙ্গহে সুলতানপুরীর এক কামরার ফ্ল্যাটে থাকতেন তরুণী।
গত করোনাকালে তরুণীর মা চাকরি হারান। তিনি স্কুলে সাফাইকর্মী ছিলেন। তবে কোভিডের সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে তিনি কর্মহীন হয়ে পড়েন। এরপরই পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ২০ বছর বয়সি সেই তরুণী। এদিকে গতবছরই কঠিন কিডনির রোগ ধরা পড়ে তরুণীর মায়ের। বিগত একবর ধরে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছিল তাঁর। মৃত তরুণীর বোন সংবাদমাধ্যমকে জানান, প্রতি মাসে তাঁর দিদি কত উপার্জন করতেন, তা তিনি জানেন না। তবে মাস শেষে মায়ের হাতে ১০ হাজার টাকা করে তুলে দিতেন সেই তরুণী। এদিকে মৃত তরুণীর মা জানান, তাঁর মেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচনে দাঁড়াতে চাইতেন এবং লোকের সেবা করতে ইচ্ছুক ছিলেন। এদিকে দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই নিজের ভাই বোনের জন্য নতুন জামা কিনেছিলেন মৃত তরুণী। ভাই, বোনদের সেই নতুন জামা দিয়ে কাজের জন্য বেরিয়েছিলেন তরুণী।
উল্লেখ্য, বর্ষবরণের রাতে দিল্লির সুলতানপুরীতে একটি স্কুটারকে ধাক্কা মেরেছিল একটি গাড়ি। এরপর স্কুটার আরোহী তরুণীর পা আটকে গিয়েছিল গাড়ির নীচে। সেই অবস্থাতেই তরুণীকে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ছেঁছড়ে নিয়ে যায় গাড়িটি। ইতিমধ্যেই গাড়িতে থাকা পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল অভিযুক্ত। দুর্ঘটনা ঘটনানো গাড়িটি মারুতি সুজুকি বলেনো। জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ক্রেডিট কার্ড এজেন্ট, একজন গাড়ির চালক এবং এক রেশন দোকানের মালিক রয়েছে। কাঞ্ঝাওয়ালা এলাকায় তরুণীর দেহটি গাড়িটি থেকে আলাদা হয়। এদিকে অভিযুক্তদের দাবি, একটি স্কুটি তাদের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। তবে তারা নাকি বুঝতে পারেনি যে তাদের গাড়ির নীচে তরুণীর দেহ আটকে গিয়েছে।