দিল্লির সুলতানপুরী দুর্ঘটনা কাণ্ডে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। আগেই এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ এবার জানতে পেরেছে যে ঘটনার সময় গাড়িতে আদতে পাঁচ নয়, বরং চারজন ছিলেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রবিবার সকালে পুলিশ অমিত খান্না (বয়স ২৫ বছর), দীপক খান্না (বয়স ২৬ বছর), মিঠুন (বয়স ২৬ বছর), কৃষাণ (বয়স ২৭ বছর) এবং মনোজ মিত্তালকে (বয়স ২৭ বছর) গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে জেরায় অভিযুক্তরা দাবি করেছিলেন দীপক খান্না গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তবে ঘটনার সময় দীপক গাড়িতেই ছিলেন না বলে জানিয়েছে পুলিশ। অমিত এবং তাঁর বন্ধুরা দীপককে রাজি করিয়েছিল পুলিশকে মিথ্যে বলতে। কারণ অমিত বা কারও কাছেই ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। তবে দীপকের কাছে লাইসেন্স ছিল। তাই ভাইয়ের আর্জিতে নিজের মাথায় দোষ নিয়েছিল দীপক। (আরও পড়ুন: কয়েকদিনের ব্যবধানে ওড়িশায় মৃত্যু তিন রাশিয়ানের, কী বলছে বিদেশ মন্ত্রক?)
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার দিন দীপক সারা দিন নিজের বাড়িতেই ছিলেন। তাঁর ফোন টাওয়ারের লোকেশনের সঙ্গে বাকি অভিযুক্তদের টাওয়ার লোকেশন মিলছিল না। এই আবহে আরও গভীরে গিয়ে তদন্ত করে পুলিশ জানতে পেরেছে অমিত খান্না গাড়িটি চালাচ্ছিলেন সেদিন। সেই অমিতেরই খুড়তুতো ভাই দীপক। তিনি পেশায় গ্রামীণ সেবা ড্রাইভার। এদিকে অমিতের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এই আবহে দীপককে গাড়ি চালানোর মিথ্যে বয়ান দিতে রাজি করিয়েছিল অমিত। অমিতের ভাই অঙ্কুশ এবং আশুতোষ নামক দুই জন এই ঘটনায় জড়িত বলে জানা গিয়েছে। আজ সকালে আশুতোষকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।
উল্লেখ্য, বর্ষবরণের রাতে দিল্লির সুলতানপুরীতে একটি স্কুটারকে ধাক্কা মেরেছিল একটি গাড়ি। এরপর স্কুটার আরোহী অঞ্জলি সিংয়ের পা আটকে গিয়েছিল গাড়ির নীচে। সেই অবস্থাতেই তরুণীকে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ছেঁছড়ে নিয়ে যায় গাড়িটি। ইতিমধ্যেই গাড়িতে থাকা পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল অভিযুক্ত। দুর্ঘটনা ঘটনানো গাড়িটি মারুতি সুজুকি বলেনো। কাঞ্ঝাওয়ালা এলাকায় তরুণীর দেহটি গাড়িটি থেকে আলাদা হয়। এদিকে অভিযুক্তদের দাবি, একটি স্কুটি তাদের গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। তবে তারা নাকি বুঝতে পারেনি যে তাদের গাড়ির নীচে তরুণীর দেহ আটকে গিয়েছে।
এদিকে সামনে এসেছে মৃত অঞ্জলির ময়নাদন্তের রিপোর্ট। তাতে স্পষ্টতই লেখা, মৃতার যৌনাঙ্গে কোনও ক্ষত নেই। তবে তাঁর মৃত্যু কতটা ভয়ানক, তা উঠে এসেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে। জনা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় মাথা ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল অঞ্জলির। তাঁর মাথা ঘিলু মেলেনি। ভেঙে গিয়েছিল তাঁর শিরদাঁড়া। অঞ্জলির শরীরের ৪০টি স্থানে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। বেশ কিছু অংশ ঘষা লেগে, পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছিল। অঞ্জলির পিঠের দিক থেকে ফুসফুস বেরিয়ে এসে দেহের বাইরে ঝুলছিল। পিঠের চামড়া উঠে যায়।