ধর্ষণের শিকার ১৪ বছরের নাবালিকাকে ২৯ সপ্তাহে গর্ভপাত করার অনুমতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে সোমবার ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ জানিয়েছে, যদি না ওই নাবালিকাকে গর্ভপাত করানোর অনুমতি দেওয়া হত, তাহলে তার শরীর এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারত। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, ‘এগুলো অত্যন্ত ব্যতিক্রমী ঘটনা। ওর জন্য প্রতিটি ঘণ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
সোমবার সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, সেটা মেডিক্যাল রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পরই বলেছে। গত শুক্রবার নির্দিষ্ট সময়ের পরও আদালত বসিয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, মুম্বইয়ের সিওন হাসপাতালকে খতিয়ে দেখতে হবে যে গর্ভপাত না করা হলে নাবালিকার শরীর এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কতটা প্রভাব পড়বে, সেটা নির্ধারণ করতে হবে। ভ্রূণের উপর কী প্রভাব পড়ছে, সেটাও খতিয়ে দেখে সোমবারের মধ্যে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
কেন্দ্রের আর্জি ও সুপ্রিম কোর্টের রায়
সেই রিপোর্ট উদ্ধৃত করে সোমবার অ্য়াডিশনাল সলিসিটর জেনারেল তথা কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী ঐশ্বর্য ভাটি আর্জি জানান যে সংবিধানের ১৪২ ধারার মাধ্যমে নিজেদের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে যেন নাবালিকাকে গর্ভপাত করার অনুমতি দেওয়া হয়। যে রিপোর্টে বলা হয়, গর্ভপাত করানো না হলে নাবালিকার স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তাঁর আর্জির প্রেক্ষিতে সংবিধানের ১৪২ ধারার আওতায় প্রদত্ত বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে অবিলম্বে নাবালিকার গর্ভপাতের অনুমতি প্রদান করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, ‘বর্তমান পরিস্থিতি এবং নাবালিকার সুস্থতার কথা বিবেচনা করে আমরা বম্বে হাইকোর্টের রায় খারিজ করে দিচ্ছি।' সেইসঙ্গে নাবালিকার গর্ভপাতের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য মুম্বইয়ের সিওন লোকমান্য তিলক মিউনিসিপ্যাল মেডিক্যাল কলেজ এবং জেনারেল হাসপাতালকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। নাবালিকার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করবে মহারাষ্ট্র সরকার।
বম্বে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নাবালিকার মা। গর্ভপাত করার অনুমতি দেয়নি হাইকোর্ট। উল্লেখ্য, ‘মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি অ্যাক্ট’ আইন অনুযায়ী, ২৪ সপ্তাহের পরে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে মহিলার জীবনের যদি ঝুঁকি থাকে বা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভ্রূণের অস্বাভাবিকতা দেখা যায়, তাহলে সেই অনুমতি দেওয়া হয়।