আইনজীবীদের ধর্মঘট নিয়ে তীব্র ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত বলেছে, আইনজীবীরা কাজ থেকে বিরত থাকলে ন্যায়বিচার সরবরাহ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে তোলে। ফলে যে সব আইনজীবীরা ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেন তাঁরা আইনি পেশা চালিয়ে যাওয়ার অযোগ্য। একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, আইনজীবীদের মুচলেখা দিয়ে জানাতে হবে যে তাঁরা ভবিষ্যতে ধর্মঘট থেকে বিরত থাকবেন। তবেই তাদের মামলা শোনা হবে। ফৈজাবাদ বার অ্যাসোসিয়েশনের একটি মামলায় এভাবেই আইনজীবীদের ধর্মঘটের তীব্র বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: পুলিশ, প্রশাসন টার্গেট করছে, খুন হতে পারি, আরজি কর মামলার আইনজীবীর সুপ্রিম সওয়াল
ফৈজাবাদ বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৬৬ দিন ধর্মঘট করেছিলেন। সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানির সময় বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং উজ্জল ভূঁইয়ার ডিভিশন বেঞ্চ ফৈজাবাদের আইনজীবীদের তিরস্কার করে। বেঞ্চ বলেছেন, ‘১৩৪ দিনের মধ্যে ৬৬ দিন ধর্মঘট করেছেন আইনজীবীরা। তাঁদের কি বার অ্যাসোসিয়েশনের লাইসেন্স রাখার কোনও অধিকার আছে? তাদের মনে রাখতে হবে তারা বিচার ব্যবস্থার একটি অংশ। এমনকী তাঁরা হাইকোর্ট এবং জেলা জজকেও মারধর করার চেষ্টা করছেন।’ এরপরই ওই বারের আইনজীবীদের সতর্ক করে সুপ্রিম কোর্ট। বেঞ্চ বলে, ‘আমরা আপনাদের এবং দেশের সব বার কাউন্সিলকে সতর্ক করছি। আমরা তাদের ওপর নজর রাখব।’
যদিও বর্ষীয়ান আইনজীবী রাকেশ খান্না আদালতকে জানান, বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীরা ধর্মঘটে ছিলেন না। তবে বেঞ্চ এনিয়ে কঠোর ব্যবস্থার উপর জোর দেয়। এরপরই বেঞ্চ সব আইনজীবীকে ব্যক্তিগতভাবে হলফনামা দিতে বলে।
আদালতের নির্দেশে বার অ্যাসোসিয়েশনকে সমস্ত আইনজীবীদের কাছ থেকে মুচলেখা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতে জানাতে হবে যে তাঁরা আর কখনও ধর্মঘট করবেন না। শুধু তাই নয়, সেই মুচলেখা জেলা জজ, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের সামনে একটি হলফনামা আকারে দাখিল করতে হবে। এদিকে, হাইকোর্টের একটি নির্দেশে স্থগিতাদেশ চায় বার। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, হাইকোর্টের নির্দেশের ওপর হস্তক্ষেপ করা হবে না। এমনটা হলে উচ্চ আদালত এবং জেলা বিচার বিভাগের মনোবল নষ্ট হবে। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে ফের শুনানি হবে আদালতে।