এবার দিল্লি থেকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে পাঠানা হল বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে। নগদ বিতর্ক ইস্যুর তদন্তের মধ্যে বদলির বিষয় নিশ্চিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট। হোলির দিন থেকেই আলোচনায় রয়েছেন ওই বিচারপতি। তাঁর দিল্লির সরকারি বাসভবন থেকে নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনা নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন-MPs salary hike:একলাফে ২৪০০০ টাকা বেতন বৃদ্ধি সাংসদদের! আরও এক বড় ঘোষণা মোদী সরকারের
সুপ্রিম কোর্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০ এবং ২৪ মার্চের বৈঠকে বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে দিল্লি হাইকোর্ট থেকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। ২০ মার্চ কলেজিয়ামের সদস্য তথা বিচারপতি যশবন্ত বর্মাকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল। সোমবার কেন্দ্রের কাছে সেই সুপারিশ পাঠানো হয়।বিচারপতি বর্মা এত দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন। তাঁর বাড়ি থেকে নগদ উদ্ধারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর দিল্লি হাইকোর্টে তাঁর বেঞ্চ বসেনি। আদালত জানিয়েছিল, ওই বেঞ্চের বিচারপতি ছুটিতে আছেন। সোমবারই দিল্লি হাইকোর্ট বিবৃতি জারি করে জানায়, ওই আদালতের সমস্ত বিচার প্রক্রিয়া থেকে যশবন্ত বর্মাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলির কথা জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।যদিও এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়েছিল, বিচারপতি বর্মার বদলির প্রস্তাবের সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে নগদ উদ্ধারের অভিযোগের তদন্তের কোনও যোগ নেই। ২০২৫ সালের ২০ মার্চ বিচারপতি বর্মাকে বদলির প্রস্তাব খতিয়ে দেখে কলেজিয়াম। সেই কলেজিয়ামে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং সুপ্রিম কোর্টের আরও চার শীর্ষ বিচারপতি।
অন্যদিকে, বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবন সংক্রান্ত ঘটনায় এফআইআর দায়ের না করে তিন সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাকারী তাঁর আবেদনে এই ঘটনাকে জনস্বার্থের জন্য বিরাট ক্ষতি বলে উল্লেখ করেছেন। শীর্ষ আদালতের কলেজিয়াম দ্বারা গঠিত তিন সদস্যের কমিটিকে অনুসন্ধানের কোনও এক্তিয়ার নেই বলে মনে করছেন মামলাকারী। এই মর্মে সুপ্রিম কোর্ট যাতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়, সেই আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।বিচারপতি বর্মার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দিল্লি হাইকোর্টের থেকে রিপোর্ট তলব করেছিল শীর্ষ আদালত। ওই রিপোর্ট ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়েছে এবং তা শীর্ষ আদালতের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। মামলাকারীর বক্তব্য, সাধারণ মানুষের মনে যে আস্থা কমতে শুরু করেছিল, সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টটি জনসমক্ষে নিয়ে আসার পরে সেই আস্থা আবার ফিরে এসেছে। এই অবস্থায় কেন বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারী।
আরও পড়ুন-MPs salary hike:একলাফে ২৪০০০ টাকা বেতন বৃদ্ধি সাংসদদের! আরও এক বড় ঘোষণা মোদী সরকারের
প্রসঙ্গত, দোলের ছুটি চলাকালীন বিচারপতি বর্মার বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণে নগদ পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। বিচারপতির সরকারি বাংলোয় আগুন লেগে গিয়েছিল। তাঁর পরিবারের সদস্যেরাই দমকল ডেকেছিলেন। দমকলের কর্মীরা বাড়িতে ‘টাকার পাহাড়’ দেখতে পান বলে দাবি করা হচ্ছে। ওই সময়ে বিচারপতি বর্মা শহরে ছিলেন না। ওই ঘটনার জেরে বিতর্ক ছড়ায়। যদিও গোটা বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলে ব্যাখ্যা করেছেন বিচারপতি বর্মা। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তিনি দিল্লিতে ছিলেন না। স্ত্রীর সঙ্গে ভোপালে গিয়েছিলেন। যে ঘর থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে, সেটি তাঁর মূল বাসভবনের বাইরে বলেও দাবি করেছেন বিচারপতি বর্মা। তাঁর দাবি, ওই ঘরে বাইরের লোকজনও যাতায়াত করে থাকেন।