রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চলে আসছে গত বছর থেকে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জট তৈরি হয়েছে। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে সেই জটের অবসান হতে চলেছে। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়ে একাধিক নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে একটি সার্চ কমিটি গঠন করে কীভাবে উপাচার্যের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং কতদিনের মধ্যে তা শেষ করতে হবে? সেই সময়সীমাও বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুনঃ রাজ্যের তালিকা থেকেই উপাচার্য নিয়োগ, সুপ্রিম নির্দেশকে স্বাগত বোসের
শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ইউইউ ললিতের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করতে হবে। সেই কমিটিই উপাচার্য নিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করবে। কমিটি চাইলে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করতে, অথবা একটি কমিটিই কাজ করতে পারে। প্রয়োজনে কমিটির চেয়ারম্যান ললিত বাবু আরও চারজন বিশেষজ্ঞকে রাখতে পারবেন।
এই কমিটি কীভাবে কাজ করবে? সে বিষয়টিও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রথমে এই কমিটি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদের জন্য তিনজন করে নাম বাছাই করবে। এরপর সেই নাম পাঠানো হবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।মুখ্যমন্ত্রী নাম বাছাই করার পর কমিটি সেই নাম পাঠাবে রাজ্যপাল বা আচার্যের কাছে। তারপর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে রাজ্যপাল নিয়োগ করবেন।
এদিকে, সার্চ কমিটির বাছাই করা নাম মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দ না হলে তিনি সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারবেন, আবার মুখ্যমন্ত্রীর বাছাই করা নাম রাজ্যপালের পছন্দ না হলে তিনিও শীর্ষ আদালতে যেতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ, দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে হবে। আর উপাচার্য নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে হবে। তাতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা জানাতে হবে। এর জন্য যা খরচ হবে তা রাজ্য সরকারকে বহন করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরেই শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স পোস্টে লিখেছেন, ‘আবার গণতন্ত্রের জয় হল।’ তৃণমূলের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ফলে রাজ্যপালের স্বেচ্ছাচারী এবং বেআইনি পদক্ষেপের অবসান হয়েছে। এক বছরে রাজ্যপাল যেভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট বুঝিয়ে দিল সেটা ভুল। একই সঙ্গে, তাদের বক্তব্য, রাজ্যপাল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্ট সময় বেঁধে দিয়েছে।