বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে সঠিক পাঠ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছিল। কারণ এই পড়ুয়াদের পাঠ দেওয়ার জন্য শিক্ষক সংখ্যা কম রয়েছে রাজ্যে বলে খবর। আর এই রাজ্যে প্রায় ২ লক্ষ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়া রয়েছে। তাই তাদের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বেশ কয়েক বছর ধরে সারা ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গেও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের পড়াশোনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাব আছে বলে অভিযোগ। এমনকী শূন্যপদ থাকলেও সেখানে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। এই অভিযোগ তুলেই দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
এই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের যাঁরা পড়ান তাঁদের স্পেশাল এডুকেটর বলা হয়। আর এই স্পেশাল এডুকেটরদের পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী এবং সুখেশ ঘোষ আজ মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা আছে। তারপরও রাজ্য সরকার ওই নির্দেশিকা মেনে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়াদের জন্য স্পেশাল এডুকেটরদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করছে না। পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিষয়টি ফেলে রেখেছে বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও সেটা কার্যকর হচ্ছে না। তাই ওইসব পড়ুয়ারা সঠিক পঠনপাঠন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একই সঙ্গে স্পেশাল এডুকেটররা তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই কঠোরভাবে হস্তক্ষেপের প্রয়োজন আছে।
আরও পড়ুন: বিদেশি নাবালিকাকে শান্তিপুরের যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করল পুলিশ, গ্রেফতার দুই
স্পেশাল এডুকেটর নিয়োগ করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর এবং ২০২৪ সালের ১২ মার্চ দিয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, ১০ জন প্রাথমিক ছাত্রছাত্রীদের জন্য একজন শিক্ষক এবং মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে প্রতি ১৫ জনে একজন স্পেশাল এডুকেটর নিয়োগ করতে হবে রাজ্য সরকারগুলিকে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই নিয়ে নির্দেশিকাও জারি করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার–সহ ভারতের অন্যান্য রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে। আর সেটা ঠিক মতো হয়নি বলেই মামলাকারীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়, ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৯৬ জন পড়ুয়া রয়েছে রাজ্যে। যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন।
এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে মামলা করা হয়। তার প্রেক্ষিতে আজ শুনানি হয়। সেখানেই আজ, সওয়াল জবাবের পর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ প্রত্যেকটি রাজ্য সরকারকে আগামী ২৮ মার্চের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করার নির্দেশ দিয়েছে। মোট অনুমোদিত কতজন স্পেশাল এডুকেটরের প্রয়োজন, সেটা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছে। আর যারা এখন সমগ্র শিক্ষা মিশনে অস্থায়ী শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত তথা কর্মরত রয়েছেন তাদের জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে স্থায়ীকরণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৫ জুলাই।