ভারতে হোয়াট্সঅ্যাপ নিষিদ্ধি করার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রুজু করা হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর, ২০২৪) সেই মামলা খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত।
সংশ্লিষ্ট মামলায় দাবি করা হয়, হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে যে বার্তার আদানপ্রদান চালানো হয়, তা গোপনীয়তা, অখণ্ডতা এবং নিরাপত্তা প্রদান করতে পারছে না। এবং এ নিয়ে মামলাকারীর তরফে উদ্বেগ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়।
মামলাকারীর আরও বক্তব্য ছিল, ভারতের নয়া তথ্যপ্রযুক্ত আইন বা নীতি মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে হোয়াট্সঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। তাই অবিলম্বে আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিক, যাতে তারা ভারতে এই পরিষেবা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
পিটিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এই জনস্বার্থ মামলাটি করেছিলেন ওমানাকুট্টান কেজি নামে এক ব্যক্তি। পেশায় সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ওই ব্যক্তি কেরালার বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার ওমানাকুট্টান কেজির ওই মামলা শুনানির জন্য বিচারপতি এম এম সুন্দ্রেশ এবং বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের বেঞ্চে ওঠে। এবং আদালত পত্রপাঠ তা খারিজ করে দেয়।
মামলাকারীর দাবি ছিল, হোয়াট্সঅ্যাপ এমন একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, যা অ্যানড্রয়েড মোবাইলের মিডিয়া ফাইলগুলি অনুমোদন ছাড়াই বদলে দেয়।
এরই প্রেক্ষিতে মামলাকারী যুক্তি দেখান, ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে পারেনি হোয়াট্সঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ এবং তারা সেই অধিকারে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ করেছে।
এই বিষয়টি পরবর্তীতে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে বলেও দাবি করেন মামলাকারী। এবং সেই কারণেই অবিলম্বে ভারতে এই মেসেজিং অ্যাপ নিষিদ্ধ করার দাবি তোলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মামলাকারী ব্যক্তি এই প্রথম যে এই বিষয়টি নিয়ে সরব হলেন, তা নয়। এর আগে কেরালা হাইকোর্টেও একই দাবি জানিয়ে মামলা করেছিলেন তিনি।
কেজির বক্তব্য ছিল, উচ্চ আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিক, যাতে তারা ভারতে হোয়াট্সঅ্যাপের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। হোয়াট্সঅ্যাপ যদি ভারতীয় প্রশাসনের নিয়ম নীতি না মানে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে এমন কঠোর পদক্ষেপই করা উচিত বলেও সেবার দাবি করেছিলেন কেজি।
কিন্তু, তাঁর করা সেই মামলাও খারিজ করে দিয়েছিল কেরালা হাইকোর্ট। আদালতের বক্তব্য ছিল, ওই মামলা 'প্রিম্যাচিওর'।
সেই মামলাতেও কেজি দাবি করেছিলেন, হোয়াট্সঅ্যাপ কর্তৃপক্ষকে ২০২১ সালের তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ম নীতি মেনে চলতে হবে।
প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট তথ্যপ্রযুক্তি নীতি অনুসারে, হোয়াট্সঅ্যাপ, ফেসবুক, এক্স-এর মতো সোশাল মিডিয়া বা মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়, তাদের অবশ্যই বার্তা প্রেরণকারীর উৎস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।
যা নিয়ে পরবর্তীতে বিতর্ক তৈরি হয় এবং হোয়াট্সঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ এই নীতির বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা রুজু করে।