যদি সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি ভোটদানের জন্য নিজের কর্মক্ষেত্র থেকে উজিয়ে নিজের বাড়িতে বা নিজের এলাকায় যেতে পারেন, তাহলে ছাত্রছাত্রীরা কেন তা পারবে না? কার্যত এই উদাহরণ ও যুক্তি উত্থাপন করেই একটি জনস্বার্থ মামলা (পিল) খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত।
শুক্রবার এই মামলার শুনানি ছিল। তাতে দাবি করা হয়েছিল, যেসমস্ত পড়ুয়া পড়াশোনার জন্য নিজেদের বাড়ির বা এলাকার বাইরে দূরবর্তী কোনও স্থানে থাকেন, তাঁদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থাপনা চালু করা হোক।
এদিন এই মামলাটি ওঠে প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে। মামলার আবেদনের প্রেক্ষিতে বেঞ্চের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়, পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থাপনাটি কেবলমাত্র নির্ধারিত কিছু শ্রেণির জন্যই কার্যকর করা হয়েছে। যেমন - প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ ও প্রবীণ নাগরিক।
এই প্রসঙ্গেই নিজের সহকর্মীর কথা উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, 'আমার সহকর্মী বিচারপতিকে দেখুন। যিনি শুধুমাত্র ভোট দেওয়ার জন্য তাঁর এলাকায় যান।' প্রসঙ্গত, এখানে প্রধান বিচারপতি তাঁর সহকর্মী বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের কথাই বলেছেন।
প্রধান বিচারপতির মুখে তাঁর ভোট দিতে বাড়ি যাওয়ার কথা শুনে নিজের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন বিচারপতি কুমারও। তিনি বলেন, ‘আমি ভোট দেওয়ার জন্যই আমার শহরে (হায়দরাবাদ) যাই।’
বিচারপতি কুমার আরও বলেন, বহু মানুষই এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হন। এক্ষেত্রে দু'টি উপায় থাকে। হয় আপনি নিজের এলাকায় গিয়ে ভোট দিন। অথবা, যেখানে বর্তমানে থাকছেন, সেখানকার ভোটারতালিকায় নিজের নাম স্থানান্তরিত করিয়ে নিন।
সংশ্লিষ্ট জনস্বার্থ মামলাটি রুজু করেছিলেন অর্ণব কুমার মল্লিক নামে এক ব্যক্তি। তাঁর আইনজীবী পি কে মল্লিকের যুক্তি ছিল, বাইরে পড়াশোনা করতে যাওয়া পড়ুয়াদের জন্য পোস্টাল ব্যালট চালু করা হলে তাঁরাও তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি, অনাবাসী ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মডেল শুরু করার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।
যদিও শীর্ষ আদালত এই আবেদন খারিজ করে দেয়। সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, 'আমরা এই বিষয়ে কোনও সাহায্য করতে পারব না।'
এর কারণ হিসাবে আদালত উল্লেখ করে, নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই এমন ব্যবস্থাপনা চালু করেছে, যার অধীনে বাড়ি থেকে দূরে পড়তে যাওয়া পড়ুয়ারা বর্তমানে যেখানে থাকছেন, সেখানকার নির্বাচনী কেন্দ্রেই নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। তাই আদালতের পক্ষে তাঁদের জন্য আলাদা করে পোস্টাল ব্যালট ব্যবহারের আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব নয়।