ঘরমুখী পরিযায়ী শ্রমিকদের রেলভাড়া মকুবের আবেদনে এই বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
জগদীপ ছোকর ও গৌরব জৈনের দাখিল করা আবেদনে বলা হয়েছিল, লকডাউনে রোজগার হারা শ্রমিকদের নিজরাজ্যে ফেরার জন্য রেলভাড়ার খরচ সামলামো অসম্ভব। এই কারণে তাঁদের থেকে যেন রেলভাড়া নেওয়া না হয়, সেই নির্দেশ দিক শীর্ষ আদালত।
মঙ্গলবার বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কাউল ও বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে জানিয়েছে, ‘শ্রমিকদের থেকে ১৫% রেলভাড়া আদায়ের বিষয়ে কোনও নির্দেশ জারি করা এই আদালতের এক্তিয়ারে পড়ে না। বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের নির্দিষ্ট শর্তাবলী অনুযায়ীনেওয়া সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।‘
আবেদনের মূল বিষয় ছিল, পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁদের রাজ্যে ফিরে যাওয়ার অনুমতি সংক্রান্ত। সুপ্রিম কোর্ট এ দিন জানিয়েছে, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গত ২৯ এপ্রিল যে নির্দেশিকা জারি করেছে, তাতেই আবেদনের সপক্ষে জবাব রয়েছে। এই কারণে আবেদনের অন্য বিষয়গুলি বাতিল করা হচ্ছে।
গত সোমবার ঘরমুখী পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে রেলভাড়া নেওয়ার বিষয়টি ঘিরে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক দেখা দেয়। দলের তরফ থছেকে শ্রমিকদের রেলভাড়া মিটিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করার পাশাপাশি এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগে কংগ্রেস। বিরোধীদের অভিযোগ, বিপন্ন শ্রমিকদের প্রতি মানবাধিকার বিরোধী পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র।
জবাবে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি দাবি করে, শ্রমিকদের ট্রেনভাড়ার ৮৫ শতাংশ রেলওয়ে বহন করছে। বাকি ১৫% ভাড়ার অর্থ রাজ্য সরকারকে বহন করতে বলে জানানো হয়, এ ভাবেই শ্রমিকদের রেলভাড়া মকুব হওয়া সম্ভব বলে সওয়াল করে কেন্দ্র ও গেরুয়া শিবির।
তবুও বিরোধীরা তর্ক করেন যে, কেন্দ্রের নির্দেশিকায় ওই ১৫ শতাংশ রেলভাড়া শ্রমিকদের থেকে আদায় করকতে রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রশাসন। যদিও একাধিক রাজ্য সরকার ওই অর্থ দিতে রাজি হয়েছে। এমনকি, যে সমস্ত রাজ্যে শ্রমিকদের থেকে ওই অর্থ নেওয়া হয়েছে, তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
রেলওয়ের তরফে জানানো হয়েছে, নিজরাজ্যে ফেরায় আগ্রহী শ্রমিকদের জন্য গত ১ মে থেকে এ পর্যন্ত মোট ১১৫টি শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো হয়েছে। বুধবার আরও ২টি ট্রেন রওনা দিয়েছে। এ দিনই রাতে শ্রমিকদের নিয়ে রওনা হবে আরও ২০টি ট্রেন।