'এক পদ, এক পেনশন' নীতির অধীনে অবসরপ্রাপ্ত যোগ্য সেনা কর্মীদের বকেয়া মেটানো সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের 'ধমক' শুনতে হল কেন্দ্রীয় সরকারকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে 'এক পদ, এক পেনশনে'র বকেয়া টাকা না দিয়ে তা চার কিস্তিতে দেওয়ার ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এভাবে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সুপ্রিম ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল কেন্দ্রকে। এই আবহে কেন্দ্রের কিস্তিতে বকেয়া মেটানোর নোটিশ প্রত্যাহার করতে বলেছিল কেন্দ্র। পাশাপাশি 'এক পদ, এক পেনশন' নিয়ে কেন্দ্রের 'রোডম্যাপ' জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আজ সেই 'রোডম্যাপ' জানাতেই মুখবন্ধ খাম সুপ্রিম কোর্টকে পেশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হন প্রধান বিচারপতি। (আরও পড়ুন: ডিএ আন্দোলনের মাঝে কড়া নির্দেশিকা জারি নবান্নর, এবার কোপ পড়বে বেতনে?)
প্রধান বিচারপতি এদিন বলেন, 'এভাবে মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট পেশের রীতিকে বন্ধ করতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট এই কাজ করলে হাই কোর্টও তা অনুসরণ করবে। এই আদালতে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। এই মুখ বন্ধ খামে রিপোর্ট পেশ করার বিষয়টি মৌলিক ভাবে বিচার ব্যবস্থার পরিপন্থী।' এরপর প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেন, মুখবন্ধ খামের যাবতীয় তথ্য যেন অবসরপ্তাপ্ত সেনাকর্মীদের পক্ষের আইনজীবীকে দেওয়া হয়। বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, 'মুখবন্ধ খাম তখনই পেশ করা যায় যখন এর জেরে তথ্যের উৎস বা কোনও ব্যক্তির ক্ষতি হতে পারে।'
আরও পড়ুন: হাওড়া থেকে চালু হবে আরও এক বন্দে ভারত, ৭৫০ কিমি দূরত্ব পার হবে মাত্র ৬ ঘণ্টায়
২০১৯-র ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে সংশোধিত 'এক পদ, এক পেনশন' নীতি। এর ফলে বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া বাবদ পেতে চলেছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীরা। সরারি হিসেব অনুযায়ী, ২৫.১৩ লাখ পেনশনভোগী লাভবান হবেন এই নীতির ফলে। পাশাপাশি, নিহত সেনাকর্মীদের বিধবা স্ত্রী ও যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত সেনাকর্মীরাও এর আওতায় আসবেন। ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সংশোধিত 'এক পক, এক পেনশন' বাবদ ২৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা খরচ করবে কেন্দ্র। অর্থাৎ, অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের পেনশন বাবদ সরকারের অতিরিক্ত খরচ হবে ৮ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সেনাকর্মীদের ৩১ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বা ডিআর-ও অন্তর্ভুক্ত।
একই পদে এবং একই মেয়াদে পরিষেবা দেওয়া প্রতিরক্ষা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্তদের ২০১৮ সালের ন্যূনতম এবং সর্বোচ্চ পেনশনের গড় করে, তার ভিত্তিতে তাদের পেনশন নির্ধারণ করা হবে। এর ফলে ভিন্ন সময়ে একই পদে থাকা অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীরা সমপরিমাণ পেনশন পাবেন। অর্থাৎ, কোনও ব্রিগেডিয়ার যদি ১৯৯০ সালে অবসর নিয়ে থাকেন, এবং অন্য এক ব্রিগেডিয়ার যদি ২০১৪ সালে অবসর গ্রহণ করে থাকেন তাহলে তাঁরা দু'জনেই সমপরিমাণ পেনশন পাবেন।