পয়গম্বর বিতর্কের জেরে গত কয়েকদিন উত্তরপ্রদেশের বেশ কিছু শহরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। হিংসার ঘটনার পরই কানপুর, সহারনপুর, প্রয়াগরাজে যোগী প্রশাসনের বুলডোজার চলেছিল ‘দাঙ্গাবাজদের’ বাড়ির উপর। যা নিয়ে বিরক্ত সুপ্রিম কোর্ট। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে নোটিশও জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী তিনদিনের মধ্যে সেই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে যোগী সরকারকে। সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘হিংসার প্রতিশোধ নিতে বাড়ি ভেঙে ফেলা যায় না।’
বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের সুপ্রিম বেঞ্চ বৃহস্পতিবার বলে, ‘দেশে আইনের শাসন রয়েছে, এবং এই বিষয়টি নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে একটি ধারণা থাকতে হবে। উত্তরপ্রদেশ সরকারকে আইনের পথ অনুসরণ করে পদক্ষেপ করতে হবে।’
এর আগে বিভিন্ন সময়ে সাম্প্রদায়িক হিংসার পরই উত্তরপ্রদেশে দেখা গিয়েছে ‘বুলডোজার রাজনীতি’। বিক্ষোভকারীদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে দেখা গিয়েছে প্রশাসনকে। এই পথে হেঁটে বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যও বিক্ষোভকারীদের ‘শায়েস্তা’ করেছে। সেই মতো কয়েকদিন আগেই ফের একবার পথে বুলডোজার নামায় উত্তরপ্রদেশ সরকার।
সম্প্রতি পয়গম্বরকে নিয়ে নূপুর শর্মার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে হিংসা ছড়ায় উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায়। সেই সময়ই সরকারের তরফে বুলডোজার চালানোর ‘হুঁশিয়ারি’ দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো গত ১২ জুন উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ, সহারানপুর ও কানপুরে হিংসা ছড়ানোয় অভিযুক্তদের সম্পত্তি ধ্বংস করার কাজ শুরু করে যোগী প্রশাসন। যদিও খাতায় কলমে সরকারের তরফে বলা হয়, যে সকল ব্যক্তির বাড়ি ভাঙা হয়েছে তা বেআইনি ভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপরই গত মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এনভি রমনাকে একটি চিঠি লেখেন সুপ্রিম কোর্টের তিন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, বি সুদর্শন রেড্ডি, ভি গোপাল গৌড়া এবং এ কে গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও কয়েকজন আইনজীবীও চিঠি লেখেন প্রধান বিচারপতিকে। যোগী সরকারের এই বুলডোজার-নীতির বিরোধিতা করেন তাঁরা। শীর্ষ আদালতকে এর প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করতেও আর্জি জানান তাঁরা।