কামদুনি ধর্ষণ ও খুনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য সরকার। এই ঘটনার সময়ে যাঁরা প্রতিবাদী ছিলেন তাঁরাও এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন। রাজ্যের হয়ে এই মামলাটি দেখছে সিআইডি। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবাদীরা আইনি পরামর্শ নিয়েছেন। এই আবহে আজ, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চাইল রাজ্য সরকার। তবে চার বিচারপতির বেঞ্চ এখনই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়নি। বরং কয়েকটি নির্দেশ দিয়ে বেঁধেছে সময়ও।
এদিকে কামদুনি ধর্ষণ ও খুনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ দু’জনের ফাঁসির সাজা খারিজ করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। একজনকে বেকসুর খালাস করা হয়েছে। আরও চার দোষী সাব্যস্তের সাজা মকুব করা হয়েছে। এই রায় মেনে নিতে পারেননি কামদুনির প্রতিবাদী থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। মৌসুমি ও টুম্পা কয়ালকে রাস্তায় কাঁদতে দেখা যায়। তখনই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা তাঁরা জানিয়েছিলেন। এবার এই মামলা গড়াল সুপ্রিম কোর্টে।
অন্যদিকে কেন স্থগিতাদেশ চাওয়া হচ্ছে? এই প্রশ্নের যুক্তি দিয়েছে রাজ্য সরকার। এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য জানিয়ে দেয়, এই ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত অপরাধী বেকসুর খালাস পেলে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা দেখা দেবে। তাই কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে অবিলম্বে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। যদিও আজ সোমবার শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়নি। এদিন মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে বিচারপতি বি আর গভাইয়ের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চে। তখনই জানিয়ে দেওয়া হয় সবপক্ষের বক্তব্য শুনে তবেই স্থগিতাদেশ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এমনকী যারা ছাড়া পেয়েছে তাদের বক্তব্যও শুনবে সর্বোচ্চ আদালত। একসপ্তাহ পর ফের মামলাটি শুনবে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের ধরনা মঞ্চ নিয়ে মামলার আবেদন বিজেপির, নাকচ করল কলকাতা হাইকোর্ট
আর কী জানা যাচ্ছে? রাজ্যের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণ। ২০১৩ সালে কামদুনিতে ঘটা নৃশংস ঘটনায় অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত। তখন ডিভিশন বেঞ্চে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। ডিভিশন বেঞ্চে দোষী সাব্যস্ত হন সইফুল আলি এবং আনসার আলি। তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়। ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আমিন আলি বেকসুর খালাস হয়। ইমানুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম এবং ভোলানাথ নস্করের সাজা কমে যায়। তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই রায়ে হতাশ পরিবারের সদস্যরা।