‘বিদ্বেষমূলক বক্তৃতার কারণে দূষিত হচ্ছে দেশের পরিবেশ। এই ধরনের বক্তৃতাকে প্রতিহত করা দরকার।’ বিদ্বেষ ছড়ানো বক্তৃতা নিয়ে করা এক মামলার প্রেক্ষিতে এমনই পর্যবেক্ষণ দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধআন বিচারপতির বেঞ্চ। যদিও সোমবারই পৃথক এক মামলায় সুপ্রিম কোর্টকে কেন্দ্র জানিয়েছে, বিদ্বেষমূলক কোনও বক্তৃতাকে বরদাস্ত করা হবে না। বিদ্বেষ ছড়ানো বক্তৃতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলার আবেদন করেন শারজাহ নিবাসী হরপ্রীত সেহগাল মানুসুখানি।
আবেদনকারীর দাবি, ভারতে বিগত দিনে অন্তত ৫৮টি এমন ঘটনা ঘটেছে যেখানে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে ভাষণের মাধ্যমে। নিজের বক্তব্য তুলে ধরার সময় আবেদনকারী আদালতে কেঁদে ফেলেন। তাঁর কথায়, ‘বিদ্বেষ ছড়ানো এই বক্তৃতা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।’ এদিকে এর প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ইউইউ ললিতের বেঞ্চ বলে, 'আপনি হয়ত ঠিক বলছেন, তবে নির্দিষ্ট তথ্য পেশ করুন। আপনার আবেদন নির্দিষ্ট নয়। আমরা নির্দিষ্ট কোনও ঘটনার ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ করতে পারি বা নির্দেশ দিতে পারি।' সুপ্রিম কোর্টের তরফে আরও বলা হয়, ‘এই বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতার ফলে সবকিছু বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে এবং আপনার এই আবেদন যুক্তিযুক্ত। এটিকে রোধ করা দরকার।’ এই আবহে আবেদনকারীকে আদালত নির্দেশ দেয়, নির্দিষ্ট ঘটনার তথ্য দিয়ে ৩১ অক্টোবর একটি হলফনামা পেশ করতে। ১ নভেম্বর মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে।
এদিকে পৃথক এক মামলায় বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং হিমা কোহলির বেঞ্চ ধর্ম সংসদের বিদ্বেষ ভাষণ নিয়ে দিল্লি এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের কাছ থেকে জবাব চেয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে এবং তদন্ত কতদূর এগিয়েছে, তা জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রসঙ্গত, গাজিয়াবাদে দসনা মন্দিরের পুরোহিত যতি নরসিংহানন্দ গিরির উদ্যোগে গতবছর ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর হরিদ্বারে ধর্ম সংসদের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই ধর্ম সংসদে বিদ্বেষমূলক ও বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ১০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। এই মামলায় এর আগেও উত্তরাখণ্ড সরকারকে ভর্ৎসনা করেছিল শীর্ষ আদালত।