আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে শুক্রবার বড় রায় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতি হিসেবে আজকেই শেষ কর্মদিবস জাস্টিস ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের। এই আবহে আজ আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তকমা পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এর আগে শীর্ষ আদালতে রায়তে জানানো হয়েছিল, আলিগড় মুলসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান নয়। তবে সেই রায় খারিজ করে দিল সাংবিধানিক বেঞ্চ। সঙ্গে এও জানিয়ে দেওয়া হল যে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান কি না, সেই সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম কোর্টের নতুন বেঞ্চ। (আরও পড়ুন: জানুয়ারি থেকে বাড়তে পারে ডিএ, কত হারে মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি হবে সরকারি কর্মীদের?)
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে হিন্দুদের বাড়িতে বাহিনীর হামলার অভিযোগ,বাংলাদেশকে কড়া বার্তা ভারতের
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়েই সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা হারিয়েছিল এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৮১ সালে তৎকালীন সরকার আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধন করে সেটিকে সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছিল। তবে ২০০৬ সালে এলাহাবাদ হাই কোর্ট ১৯৮১ সালের সংশোধনীকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছিল। সেই সময় উচ্চ আদালতের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংখ্যালঘু সংস্থার মর্যাদা পেতে পারে না। তবে হাই কোর্টের সেই যুক্তি খারিজ করল শীর্ষ আদালতের সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। এই আবহে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান কি না, সেই সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম কোর্টের পৃথক বেঞ্চ। (আরও পড়ুন: গঙ্গার নীচে দিয়ে আরও একটি সুড়ঙ্গ তৈরি হবে কলকাতা থেকে হাওড়া, দাবি রিপোর্টে)
আরও পড়ুন: আরজি করের চিকিৎসক খুনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র অনেকটাই পরিষ্কার: CBI অফিসার
আজ সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির বেঞ্চ ৪-৩ মতামতের ভিত্তিতে শুক্রবার রায় দেয়, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের সংবিধানের ৩০ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে সংখ্যালঘু মর্যাদার অধিকারী। উল্লেখ্য, সংবিধানের ৩০ (এ) অনুচ্ছেদে ভাষা ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনার অধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র এই রায়ের পক্ষে মত প্রকাশ করেন। এই নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'উল্লেখিত সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানটি অবশ্যই সংখ্যালঘুদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হতে হবে এবং তা সংখ্যালঘুদের দ্বারাই পরিচালিত হতে হবে।' বাকি তিন বিচারপতি ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। সেই তিন বিচারপতি - জাস্টিস সূর্য কান্ত, জাস্টিস দীপঙ্কর দত্ত এবং জাস্টিস সতীশ চন্দ্র বলেন, 'দুই বিচারপতির বেঞ্চ যেভাবে মামলাটি সাত সদস্যের বেঞ্চে রেফার করেছে, তা আইনের দৃষ্টিকোণে ভুল। দুই বিচারপতির বেঞ্চ প্রথমে তিন সদস্যের বেঞ্চকে মামলাটি রেফার করতে পারে।' (আরও পড়ুন: ডিএ বাড়াচ্ছে না রাজ্য, এবার সরকারের 'চোখে চোখ রাখার' সিদ্ধান্ত কর্মচারীদের)
আজকের নির্দেশে বলা হয়, 'আজিজ বাশার রায়টি বাতিল করা হল। বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান কি না।' এই নিয়ে কেন্দ্রের তরফ থেকে সলিসিটর জেনারেলের যুক্তি ছিল, '১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক-স্বাধীনতা যুগেও জাতীয় স্তরের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল। তাই তাকে কেবলমাত্র সংখ্যালঘুদের জন্য বলা যেতে পারে না।' কেন্দ্র আরও জানিয়েছিল, ১৯৮১ সালে কংগ্রেস সরকারের পাশ করানো সংশোধনী বাতিল করে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিতে চায় তারা। তবে সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায়তে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু তকমা পেতে পারে। এই আবহে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান কি না, সেই সংক্রান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম কোর্টের পৃথক বেঞ্চ। আর সেটা হলে শিডিউল ট্রাইব, শিডিউল কাস্ট এবং আর্থিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্যে এখানে আসন সংরক্ষিত থাকবে না। এদিকে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংখ্যালঘু তকমা পেলে সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ৫০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে।