১৯৯২-৯৩ সালের দাঙ্গার সময় সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল সরকার। হিংসার ৩০ বছর পর এমনই পর্যবেক্ষণ করল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর মুম্বই জুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল। শীর্ষ আদালতের কথায়, সংবিধানের ২১ নং ধারা অনুযায়ী জনগণের অধিকার রক্ষা করা এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের দায়িত্ব। তবে তৎকালীন সরকার সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিল বলে পর্যবেক্ষণ করে শীর্ষ আদালত।
শীর্ষ আদালত বলে, ‘নাগরিকদের যদি সাম্প্রদায়িক হিংসার পরিবেশে বসবাস করতে বাধ্য করা হয়, তবে এটি তাদের জীবন যাপনের অধিকারকে প্রভাবিত করে। এটি সংবিধানের ২১ নং ধারার উলঙ্ঘন। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর এবং ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে মুম্বইয়ের সহিংসতা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের অধিকারকে খর্ব করেছে এবং মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপনকে প্রভাবিত করেছে। এই হিংসায় ৯০০ জন মারা গিয়েছিল এবং ২০০০ জনেরও বেশি লোক জখম হয়েছিলেন। অনেকের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছিল। এগুলি ভারতের সংবিধানের ২১ নং অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন।’
শীর্ষ আদালত আরও বল, ‘সরকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্র করতে পারেনি বলেই দাঙ্গায় সাধারণ জনগণের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।’ শীর্ষ আদালত বলে, দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আদালত এই বিষয়টিকে নোট করে যে মহারাষ্ট্র সরকার ক্ষতিগ্রস্থদের ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ৯০০ জন মৃত ব্যক্তি এবং ৬০ জন নিখোঁজ ব্যক্তির আইনি উত্তরাধিকারীকে এই অর্থ প্রদান করা হয়েছিল। তবে আরও ১০৮ জন নিখোঁজ হয়েছিলেন সেই দাঙ্গায়। সেই ১০৮ জনের নিকটাত্মীয়কে খুঁজে পায়নি সরকার। তাই সেই ১০৮ জন নিখোঁজ ব্যক্তির আত্মীয়কে কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়নি সরকার। এই আবহে শীর্ষ আদালত রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়, নিখোঁজ ১০৮ ব্যক্তির পরিবারকে খুঁজে বের করে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ১৯৯৯ সালের ২২ জানুয়ারি থেকে টাকা দেওয়ার দিন পর্যন্ত সেই ক্ষতিপূরণের ওপর ৯ শতাংশ হারে সুদও দিতে হবে সরকারকে।