অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যে প্রায়শয়ই রাজ্যপালের সঙ্গে সরকারের সংঘাত দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংঘাতটা হয় কোনও বিল ঘিরে। বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হলেও তা সময় মতো সই করে অনুমোদন দেন না রাজ্যপাল। আমাদের রাজ্যে এ জিনিস বিগত বছরে বহুবার দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি তামিলনাড়ুতেও দেখা গিয়েছে এই জিনিস। তেলাঙ্গানাও এই 'সমস্যায়' ভুগেছে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সরকার। এই মামলার প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাজ্যপালদের বিলে সই করে দেওয়া উচিত। (আরও পড়ুন: অপেক্ষা ২৮ এপ্রিলের, ডিএ নিয়ে বড় খবর পেতে চলেছেন সরকারি কর্মীরা)
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি নরসিংহের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। তেলাঙ্গানা সরকারের দাবি ছিল রাজ্যপাল তামিলিসাই সুন্দরারাজন যেন শীঘ্রই ১০টি বিলে সই করেন। এই আবহে সোমবার বেঞ্চের তরফে পর্যবেক্ষণ করা হয়, সব রাজ্যের রাজ্যপালদেরই উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিলে সই করে তা আইনে পরিণত করা। আদালতের তরফে সংবিধানের ধারা নং ২০০ (১)-এর উল্লেখ করে বলা হয়, 'যত তাড়াতাড়ি সম্ভব' - এই কথাটার উল্লেখযোগ্য সাংবিধানিক মর্ম রয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তা মাথায় রাখা উচিত। উল্লেখ্য, সংবিধানের ২০০ নং ধারা অনুযায়ী, রাজ্যের বিধানসভায় কোনও বিল পাশ হলে (বা যে রাজ্যে বিধান পরিষদ রয়েছে, সেই ক্ষেত্রে উভয় কক্ষে) তা রাজ্যপালের কাছে পাঠাতে হবে। এরপর রাজ্যপালকে এই বিলে সই করে তাঁর সম্মতি জানাতে হবে বা বিলে সম্মতি না দিয়ে বিলটিকে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হবে।
এদিকে মামলার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দাবি করেন, রাজ্যপাল তামিলিসাই সুন্দরারাজনের কাছে কোনও বিল পড়ে নেই। তিনি কিছু বিলে কিছু সংশোধন চেয়ে তা ফেরত পাঠিয়েছেন। এদিকে তেলাঙ্গানা সরকারের পক্ষে আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে আদালতে বলেন, 'রাজ্যপালের এহেন আচরণের কারণে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার তাঁর দয়ায় কাজ করে। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাটের মতো রাজ্যে একদিনের মধ্যে বিলে অনুমোদন দিয়ে দেন সেখানকার রাজ্যপালরা। তবে বিরোধী শাসিত রাজ্যে বারবার তাতে বাধা পড়ে।' তেলাঙ্গানা সরকারের অভিযোগ, বর্তমানে রাজ্যপালের কাছে ১০টি বিল পড়ে রয়েছে। তিনি তাতে সই করেননি। এর মধ্যে থেকে তিনটি বিল ফেব্রুয়ারিতে পাঠানো হয়েছিল। আর সাতটি গত সেপ্টেম্বরে পাঠানো হয়। এই আবহে দেশের সব রাজ্যপালের উদ্দেশেই শীর্ষ আদালতের একটি অদ্বিতীয় নির্দেশনা দেওয়া উচিত বলে দাবি করা হয়। অবশ্য, পরবর্তীতে মামলাটি খারিজ হয়ে যায় সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যপাল বিলগুলিকে অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানানো হয় শীর্ষ আদালতে। এরপরই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। তবে পর্যবেক্ষণে শীর্ষ আদালত বলে, 'যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিলে সই করা উচিত রাজ্যপালের।'