আকাশে ওড়ার আর কোনও সম্ভাবনাই থাকল না জেট এয়ারওয়েজের জন্যে। আজ সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে আজ এই মামলায় নির্দেশ দিয়ে জানানো হল, সংস্থা ভেঙে দিয়ে এর সম্পত্তি নিলামে তুলতে হবে। উল্লেখ্য, গতবছর জুলাই মাসে এয়ার অপারেশন সার্টিফিকেট পেয়েছিল জেট এয়ারওয়েজ। তবে আজ সংস্থার আকাশে ওড়ার স্বপ্ন ভেঙে গেল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে। এর আগে ন্যাশনাল কোম্পানি ল' অ্যাপিলেট ট্রাইবুনালের তরফ থেকে জেট এয়ারওয়েজকে উজ্জীবিত করার সিদ্ধান্ত শোনানো হয়েছিল। সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ না করলেও, যাতে মালিকানা হস্তান্তর করা যায়, তার সপক্ষে নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইবুনাল। তবে বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপিলেট ট্রাইবুনালের সেই সিদ্ধান্ত খারিজ করে দিল আদালত। সুপ্রিম কোর্ট সাফ ভাষায় জানিয়ে দেয়, এছাড়া আর রাস্তা নেই। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, সব তথ্য খতিয়ে না দেখেই কোম্পানি ল’ ট্রাইবুনাল এই অধিগ্রহণের অনুমতি দিয়েছিল। (আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাঝপথে কি বিধি বদল করা যায়? বড় রায় SC-র)
আরও পড়ুন: কানাডার মন্দিরে খলিস্তানি হামলার পর সাসপেন্ড হিন্দু পুরোহিত, তাঁর দোষ...
প্রসঙ্গত, জেট এয়ারকে ফের আকাশে ওড়াতে ৪৭৮৩ কোটির প্যাকেজের দর হেঁকেছিল জালান-কালরক কনসোর্টিয়াম। পাঁচ বছরে দফায় দফায় সেই টাকা দেওয়ার কথা ছিল জালান-কালরকের। এদিকে এসবিআই-এর নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম জানায়, জালান-কালরকের সেই দর গৃহীত হওয়ার দুই বছর পরও প্রথম দফার ৩৫০ কোটি পায়নি তারা। পরে সেই মামলা গড়িয়েছিল আদালতে। এরই মাঝে গত মার্চ মাসে ন্যাশনাল কোম্পানি ল' অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল নির্দেশ দিয়েছিল, পার্ফর্ম্যান্স ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি বাবদ ১৫০ কোটি টাকা দিতে হবে জালান-কালরক কনসোর্টিয়ামকে। আর ৯০ দিনের মধ্যে সম্পত্তি হস্তান্তরেরও নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাইবুনাল। তবে ট্রাইবুনালের নির্দেশ খারিজ করে দিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, জেট এয়ারওয়েজের লিকুইডেশন করতে হবে এবং সম্পত্তি নিলাম করে দিতে হবে। (আরও পড়ুন: ডিএ বৃদ্ধি রাজ্যের IAS-IPSদের, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের কর্মীরা পাবেন বকেয়া মহার্ঘ ভাতা)
আরও পড়ুন: প্রথমদিনে মাত্র ১২% সাবস্ক্রিপশন, 'গ্রে মার্কেটে' সুইগির শেয়ারের দাম এখন কত?
উল্লেখ্য, ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় উড়ান সংস্থা ছিল জেট এয়ারওয়েজ। তবে কয়েক বছর আগে হাজার হাজার কর্মীকে কাঁদিয়ে ঝাঁপ ফেলেছিল সেই সংস্থা। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকেই বন্ধ হয়ে যায় জেট এয়ারওয়েজ। এরই মাঝে জেট এয়ারের যাত্রী পরিষেবা পুনরায় চালু করার আবেদন জানিয়েছিল জালান-কালরক কনসোর্টিয়াম। সেই ব্যবসায়িক গোষ্ঠী দাবি করে, ডিরেক্টোরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন থেকে যাত্রী পরিষেবা চালুর জন্য ছাড়পত্র পেয়েছে তারা। তবে সেই ছাড়পত্র পাওয়ার পরও আকাশে ওড়া হয়নি জেট এয়ারওয়েজের। সেই সময় কনসোর্টিয়ামের তরফে দাবি করা হয়েছিল, সাধারণ বিমানযাত্রীদের কথা মাথায় রেখে উড়ান পরিষেবা ঢেলে সাজানো হবে। বিমানে দু'টি ক্লাসের ব্যবস্থা থাকবে - ইকোনমি এবং বিজনেস। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাসের কেবিন বিশ্বমানের করা হবে। এছাড়া ইকোনমি ক্লাসের আসনও অত্যাধুনিক করা হবে। তবে এত সব পরিকল্পনার মাঝেও টাকা মেটায়নি কনসোর্টিয়ামটি। এর জেরে আকাশে ডানা মেলতে পারল না জেট এয়ারওয়েজ।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালে চালু হয়েছিল জেট এয়ারওয়েজ। বিগত কয়েক দশকে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল এই উড়ান সংস্থা। ২০১৯ সালে যাত্রী পরিষেবা বন্ধের আগে ৬৫টি ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক রুট বিমান চালাত সংস্থাটি। জেট এয়ারওয়েজের কাছে তখন ১২৪টি বিমান ছিল।