সংসদে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের করা পিটিশন গ্রহণ করতে অস্বীকার করল সুপ্রিম কোর্ট। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, আবেদনকারীরা এই বিধানের বৈধতার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যেতে পারেন। উল্লেখ্য, কংগ্রেস নেতা জয়া ঠাকুর এবং অলাভজনক সংস্থা ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান উইমেন (এনএফআইডাব্লু) এই সংক্রান্ত মামলার আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। (আরও পড়ুন: গভীর রাতে শাসকদলের বিধায়কের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার, রহস্যজনক মৃত্যুর তদন্তে পুলিশ)
উল্লেখ্য, সংসদে সংবিধান (১০৬তম সংশোধনী) আইন, ২০২৩ পাশ করানোর মাধ্যমে লোকসভা নির্বাচনে মহিলা সংরক্ষণ কার্যকর করা হয়েছিল। এই আবহে মামলা আবেদনকারীদের দাবি ছল, এই আইনের দু'টি বিধান বাতিল করতে হবে। প্রসঙ্গত, উল্লেখিত আইনে বলা হয়েছে, সংরক্ষণ কার্যকর করার পূর্বশর্ত হিসাবে আদমশুমারি পরিচালনা করতে হবে এবং আসন পুনর্বিন্যাসের জন্যে সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, 'আমরা ৩২ নং অনুচ্ছেদের অধীনে হস্তক্ষেপ করতে চাই না।' সংবিধানের উল্লিখিত বিধানটি নাগরিকদের মৌলিক অধিকার প্রয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার অনুমতি দেয়। এই আবহে বিচারপতি পিবি ভারালে আবেদনকারীদের প্রশ্ন করেন, 'এখানে কোন মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, তা বলুন।'
প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট সাংবিধানিক সংশোধনী অনুসারে, এরপর প্রথম জনগণনা সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক পরিসংখ্যান প্রকাশিত হলে, তারপরই সংসদে এবং সংশ্লিষ্ট সমস্ত রাজ্যের বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ কার্যকর করা যাবে। যদিও সংশোধিত আইনের বিধিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি, কীভাবে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলিকে চিহ্নিত করা হবে। এই সংক্রান্ত আইনটি পাশ করার জন্য সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল। লোকসভায় এই সংক্রান্ত বিলের পক্ষে পড়েছিল ৪৫৪টি ভোট। বিপক্ষে ২টি ভোট পড়েছিল। এই বিলে শর্তসাপেক্ষে সমর্থন করে বিরোধীরা। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর 'নারী শক্তি বন্দন আধিনিয়ম' রাষ্ট্রপতির সম্মতি পায়।
এদিকে মামলার আবেদনকারী এনএফআইডাব্লুয়ের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সুপ্রিম কোর্টে বলেন, 'সংরক্ষণ দেওয়ার সঙ্গে সীমানা নির্ধারণের কী সম্পর্ক? এটা সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের (সাম্যের অধিকার) লঙ্ঘন।' তবে সুপ্রিম কোর্ট বলে, এতে সংবিধানের ১৪নং অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হয়নি। এদিকে কেন্দ্রের তরফে আইনজীবী কানু আগরওয়াল বেঞ্চকে জানান, আইন রূপায়ণের সময় আইনি নীতির অঙ্গ, এ বিষয়ে কোনও বিচারবিভাগীয় পর্যালোচনা হতে পারে না।