১৬ বছর আগে, ফ্ল্যাট কেনার টাকা দিয়েও শান্তি ছিল না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চাবি আসছিল না হাতে। কোনও উপায় না দেখে সোজা ন্যাশনাল কমিশনের কাছে দ্বারস্থ হয়েছিলেন ক্রেতারা। সুদ সমেত ফেরত চেয়েছিলেন পুরো টাকা। এরপরেই মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত।
ক্রেতার হাতে ফ্ল্যাট তুলে দিতে দেরি হলেই, ডেভেলপারকে বাড়ির ক্রেতাদের দেওয়া সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দিতে হবে। এক মামলার নিষ্পত্তি করতে এমনই আদেশ দিয়েছিল এনসিডিআরসি অর্থাৎ ন্যাশনাল কনজিউমার ডিসপিউটস রিড্রেসাল কমিশন। সোমবার, অর্থাৎ ২৯ জুলাই এই আদেশই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: (Anurag Thakur remarks: অনুরাগের কথা বাদ যায়নি, তাহলে মোদী কীভাবে স্বাধিকারভঙ্গ করল, প্রশ্ন বিজেপির)
সুপ্রিম কোর্ট কী কী নির্দেশ দিয়েছে
বিচারপতি বিআর গাভাই এবং সন্দীপ মেহতার একটি বেঞ্চ, এনসিডিআরসির নির্ধারিত সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করেছে। বেঞ্চ বলেছে যে এই রায়ের তারিখ থেকে তিন মাসের মধ্যে, টাকা দেওয়ার তারিখ থেকে ফেরতের তারিখ পর্যন্ত বার্ষিক ১২ শতাংশ হারে বকেয়া অর্থ প্রদান করা হবে। শীর্ষ আদালতের দাবি যে বাড়ির ক্রেতাদের কোনও দোষ না থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ সময়ের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছিল। মামলার তথ্যগুলি ভালো করে দেখে বেঞ্চ আরও জানতে পেরেছে যে প্রজেক্টটি সম্পূর্ণ করতে অকারণ দেরি হয়েছিল। পুরো টাকা দিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফ্ল্যাট পাননি তাঁরা। তাই এই সুদের হার তাঁদের প্রাপ্য।
আসল ঘটনাটি কী
অভিযোগ অনুসারে, ডেভেলপার ২০০৮ সালে সুভাষ নগরে 'পার্শ্বনাথ প্যারামাউন্ট' নামে একটি গ্রুপ হাউজিং প্রজেক্ট চালু করেছিলেন। বাড়ির ক্রেতারা এই প্রজেক্টে একটি তিন কামরার ফ্ল্যাট বুক করেছিলেন। ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই, ফ্ল্যাটটি বুকিংয়ের প্রাথমিক পরিমাণ হিসাবে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা এবং পেমেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী অবশিষ্ট অর্থও দিয়ে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: (Khameni orders attack on Israel: ইরানের মাটিতে হামাস প্রধান খুন হতেই ইজরায়েলে হামলার নির্দেশ খামেনির)
উল্লেখ্য, ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে চুক্তি অনুসারে, ফ্ল্যাটটি যে নির্দিষ্ট টাওয়ারে অবস্থিত ছিল তার নির্মাণ শুরু হওয়ার তারিখ থেকে ৩০ মাসের মধ্যে ফ্ল্যাটের নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল। অথচ, সময়মতো অর্থ প্রদানের পরেও, যে সময়ের মধ্যে ফ্ল্যাটটি পাওয়ার আশা করা হয়েছিল, সেই সময়ের মধ্যে ফ্ল্যাটের দখল হস্তান্তর করা হয়নি। এরপর বাড়ির ক্রেতারা প্রজেক্টটি কতদূর এগোল, সেই সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য বহুবার যোগাযোগ করারও চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট আপডেট পাননি৷
এবার ফ্ল্যাটটি হাতে পেতে দেরি হওয়ার কারণে ক্ষুব্ধ, ক্রেতারা এনসিডিআরসি-এর কাছে গিয়েছিলেন। বর্তমান বাজার মূল্য অনুসারে, ফ্ল্যাটটি কেনার জন্য তাঁদের দেওয়া পুরো অর্থ ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন, এছাড়াও ফ্ল্যাট বুকিংয়ের তারিখ থেকে অর্থপ্রদানের তারিখ পর্যন্ত ২৪ শতাংশ বার্ষিক হারে সুদের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলেন।
আরও পড়ুন: (50 Lakh ITR Filings on Last Day: 'পরীক্ষার শেষ মিনিটে স্পিড বাড়ল হাতের', শেষ দিনে কত লোকে ফাইল করলেন ITR?)
কিন্তু এনসিডিআরসি অভিযুক্ত পার্শ্বনাথ ডেভেলপারস লিমিটেডকে টাকা নেওয়ার তারিখ থেকে ফেরত তারিখ পর্যন্ত বার্ষিক ৯ শতাংশ হারে সুদ দিতে বলেছিল। আর এই আদেশটি একেবারেই পছন্দ হয়নি ক্রেতাদের। তাই ক্রেতারা ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, এনসিডিআরসির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল। আর এবার এতদিন পরই সেই মামলারই চূড়ান্ত রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।