বৃহস্পতিবার কেন্দ্র সরকারের কড়া সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বহুদিন ধরে ঝুলে থাকা নিয়ে এদিন প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত। আক্ষেপের সুরে আদালত জানায়, কলেজিয়ামের অনুমোদনের পরেও খালি কয়েকটা রেকমেন্ডেশনের জন্য গত ১৯ মাস ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে ৫৫ জনের নাম পড়ে আছে সরকারের টেবিলে। আর কতদিন পরে এগোবে নিয়োগ? তাছাড়া কলেজিয়ামের কাছে বাকি নামগুলিই বা কবে পাঠানো হবে?
তিন সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউল ও সূর্য্য কান্ত। বিচারপতি কিষাণ কউল নিয়োগ প্রক্রিয়া বিষয়ক একটি তালিকা এদিন পড়ে শোনান। সেখানে দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টের শূন্যপদের সংখ্যা তুলে ধরেন তিনি। সেই সঙ্গে কোথায় কতজন বিচারপতিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া মাঝপথে থমকে রয়েছে, তাও স্পষ্ট করে দেন।
কেন্দ্র সরকারের পক্ষে আইনজীবী কে কে বেণুগোপাল এদিন উপস্থিত ছিলেন। বিচারপতি কিষাণ কউল তাঁকে বলেন, 'সবকিছুর একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকা প্রয়োজন। কলেজিয়ামের ছাড়পত্রের পরেও আইন মন্ত্রকের গড়িমসির জন্য এত দিন নিয়োগ আটকে। কোথাও কোথাও ৮ মাস থেকে ১ বছর হয়ে গেল।'
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানান, দেশের বিভিন্ন হাই কোর্টে অসংখ্য বিচারপতির পদ খালি। অথচ হাইকোর্ট কলেজিয়াম এখনও সেটা পূরণের জন্য কোনও নামই রেকমেন্ড করেনি। এটা খুবই চিন্তার বিষয়।
২২ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুসারে দেশের ২৫টি হাই কোর্টে মোট ৪২০টি ভ্যাকেন্সি রয়েছে। দেশে হাইকোর্টগুলিতে সব পদ পূর্ণ থাকলে মোট ১,০৮০ জন বিচারপতি থাকার কথা। সেখানে মাত্র ৬৬১ জন হাইকোর্টের বিচারপতি বর্তমানে রয়েছেন। ফলে, সাধারণ বিচারপ্রক্রিয়া জমতে থাকা ও দেরি হওয়ার কারণ, কিছুটা হলেও আন্দাজ করা যায়। তবে, এখনও পর্যন্ত নিয়োগে দেরি হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট কোনও কারণ জানায়নি কেন্দ্র।