৩৪ বছর পর এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। যে সময় মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল তখন তিনি নাবালিকা ছিলেন। সেই সংক্রান্ত এফআইআর বাতিল করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেক্ষেত্রে মহিলার অভিযোগ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত। ঘটনাটি অসমের। ২০১৬ সালে অসমের একটি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই মহিলা। সুপ্রিম কোর্ট সেই সংক্রান্ত মামলায় ফৌজদারি কার্যধারা বাতিল করেছে।
আরও পড়ুন: ২৬ বছরের পুরনো ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্তকে মুক্তি দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট
মামলার বয়ান অনুযায়ী, দেশব্যাপী যখন ‘মি টু’ আন্দোলন জোরালো হয়েছিল সেই সময় ওই মুসলিম মহিলা অসমের একটি থানায় হিন্দু ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তার অভিযোগ ছিল, ১৯৮২ সালে ওই ব্যক্তি তাকে যৌন নির্যাতন করেছিল। সেই সময় তিনি নাবালিকা ছিলেন। শুধু তাই নয়, এরফলে তিনি একটি শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছিলেন। ঘটনাই কামরূপ জেলা আদালত এফআইআর বাতিল করতে অস্বীকার করেছিল। পরে এফআইআর বাতিলের দাবিতে গুয়াহাটি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। হাইকোর্টও এফআইআর বাতিল করতে অস্বীকার করে। সেক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি। মামলা ওঠে বিচারপতি বিআর গাভাই এবং সন্দীপ মেহতার একটি বেঞ্চে।
এই মামলায় রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘আমরা তদন্তকারী অফিসারের রিপোর্ট থেকে দেখতে পাচ্ছি যে মামলাটি শুধুমাত্র সম্পত্তির লোভের জন্য দায়ের করা হয়েছিল। তাই এখানে ভুল করলে চলবে না।’ বেঞ্চ আরও বলে, ‘এই মামলায় ফৌজদারি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে আইনের অপব্যবহার ছাড়া আর কিছুই হবে না। রেকর্ডে থাকা বিষয়গুলি থেকে বোঝা যায় যে সম্পর্কটি সম্মতিপূর্ণ ছিল। একইসঙ্গে যে সন্তানের জন্ম হয়েছে তাকেও অর্থ এবং সমস্ত রকমের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।’
বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, যে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে সেটি ৩৪ বছর আগে ঘটেছিল। সে ক্ষেত্রে নির্যাতিতা মহিলাই শুধু নাবালিকা ছিলেন না, অভিযোগকারী ব্যক্তিও নাবালক ছিলেন। ফলে সে ক্ষেত্রে এটি নিজেই কার্যধারা বাতিল করার একটি ভিত্তি হতে পারে। একইসঙ্গে আদালতের প্রশ্ন, এতদিন ধরে কেন ওই মহিলা চুপ ছিলেন? সে বিষয়টি এফআইআরে উল্লেখ করা হয়নি। এই বলে ফৌজদারি কার্যধারা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট।