দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’ থেকে ‘ভারত’-এ পরিবর্তন করার আর্জি শুনতে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট। ওই আবেদন পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে একই সঙ্গে দুটি নাম পরিবর্তনের আবেদনের শুনানি ছিল। প্রথম আবেদনে দিল্লিবাসী জনৈক ‘নমাহ’ দাবি করেন, ইন্ডিয়া নামটির উৎস আদতে গ্রিক শব্দ। পরে ব্রিটিশ সরকার সেই নামই বহাল রাখে তাদের উপনিবেশের জন্য। বিদেশিদের দেওয়া এই নাম বহাল রাখার অর্থ বিগত ইংরেজ আমলের পরম্পরা বজায় রাখা, যুক্তি দেন আবেদনকারীর আইনজীবী। তাঁর যুক্তি, ভারত নামটি দেশের গৌরব ও ঐতিহ্যের সঠিক মূল্যায়ণ করে বলেই সরকারি ভাবে দেশের নাম পরিবর্তন করা উচিত।
এই সওয়ালের প্রতিক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ ভারতীয় সংবিধান থেকে উদ্ধৃতি দেয়। প্রধান বিচারপতি সংবিধানের প্রথম অনুচ্ছেদের অংশ পাঠ করেন, যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে ইন্ডিয়া ও ভারত অভিন্ন রাষ্ট্র।
এর জেরে আবেদনকারীর আইনজীবী সংবিধানের প্রথম অনুচ্ছেদ সংস্কারের আর্জি জানান। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দিতে অস্বীকার করে প্রধান বিচারপতি বোবডে ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের এই বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়। এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ না কতরে তা বিবেচনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
এর কয়েক মিনিটের মধ্যে আরও একটি নাম পরিবর্তনের আবেদন একই বেঞ্চের এজলাসে ওঠে। এবার বম্বে হাই কোর্টের নাম পালটে তা মহারাষ্ট্র হাই কোর্ট রাখার আবেদন জানান মুম্বইয়ের শ্রম আদালতের প্রাক্তন মুখ্য বিচারক ভি পি পাটিল।
১৯৬০ সালের মহারাষ্ট্র নির্দেশিকা (Adaptation of Laws-State and Concerned Subjects) আইনের ৪ নম্বর অনুচ্ছেদের এক নম্বর ধারায় উল্লিখিত High Court of Bombay-এর নাম পালটে High Court of Maharashtra রাখার প্রস্তাব উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ শাসনের স্মৃতিবিজড়িত আদালতের পুরনো নাম পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী।
উল্লেখ্য, ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারতীয় হাইকোর্ট আইন পাশ করলে দেশের তিন বড় শহর ম্যাড্রাস, কলকাতা ওন বম্বের নামে তিনটি হাই কোর্ট প্রতিষ্ঠা করে ইংরেজ সরকার। আদালতের নাম পরিবর্তনের আবেদনটিও কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।