দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গো হত্যা এবং গরু পাচার নিয়ে নিজস্ব আইন রয়েছে। সেই সমস্ত আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলা গ্রহণ করল না শীর্ষ আদালত। মামলায় গো-রক্ষক গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনা বৃদ্ধির অভিযোগ জানিয়ে এই আর্জি করা হয়েছিল। আদালত বলেছে, গণপিটুনির ঘটনার বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই বাধ্যতামূলক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের জন্য নির্দিষ্ট উচ্চ আদালতে যেতে হবে।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে রোজ ৫০,০০০ গরুকে হত্যা করা হচ্ছে! যোগী সরকারকেই তোপ BJP বিধায়কের
মামলাটি ওঠে বিচারপতি বি আর গাভাই এবং কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে। শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘দিল্লিতে বসে আমরা দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি পর্যবেক্ষণ করতে পারি না। এই ধরণের মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট সম্ভব নয়। তবে তেহসিন পুনাওয়ালা মামলায় ২০১৮ সালের রায়ে গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল তা পুলিশ এবং অন্যান্য সমস্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাধ্যতামূলকভাবে পালন করতে হবে। তবে লঙ্ঘন করা হলে তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্টে আবেদন করতে হবে। এদিন কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় গণপিটুনিকে একটি নির্দিষ্ট অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আইন বাস্তবায়ন করা রাজ্যগুলির দায়িত্ব।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার জন্য নির্দিষ্ট হাইকোর্টকে এড়িয়ে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা যাবে না।’
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা দাখিল করেছিলেন সিপিআই-এর মহিলা শাখা ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান উইমেন। আবেদনকারীর আইনজীবী নিজামউদ্দিন পাশা বেঞ্চকে জানান, গো-রক্ষার নামে মুসলিমদের লক্ষ্য করা হচ্ছে। দেশে প্রতিনিয়ত এই ধরনের বিপুল সংখ্যক ঘটনা ঘটছে। এমনকী পুলিশ হিংসায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছে। তিনি অভিযোগ করেন, তেহসিন পুনাওয়ালা মামলায় যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল তা মেনে চলা হচ্ছে না। তিনি এক্ষেত্রে গণপিটুনির ঘটনায় একই পরিমাণ ক্ষতিপূরণের আর্জি জানিয়েছিলেন।বেঞ্চ জানায়, ক্ষতিপূরণ ছোটখাটো এবং গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য একই রকম হতে পারে না। ন্যূনতম অভিন্ন ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করলে সমস্যা হতে পারে।
এছাড়াও, আবেদনকারী ১৩টি রাজ্যে এই ধরনের আইনের বৈধতাকেও চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, গোহত্যা বা গরু পাচারের সন্দেহে ব্যক্তিগত প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করার অনুমতি দেওয়ার বিরোধিতা করেন। বেঞ্চ বলেছে, এরজন্য প্রতিটি আইন পৃথকভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। সুপ্রিম কোর্ট এই সমস্ত আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখার জন্য ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। এরজন্য হাইকোর্ট রয়েছে। তাই হাইকোর্টে যেতে হবে।