বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > অভয়ারণ্য, জাতীয় উদ্যানের আশেপাশের কতটা এলাকা ‘স্পর্শকাতর’? কেন্দ্রের আর্জিতে পুনর্বিবেচনায় সুপ্রিম কোর্ট

অভয়ারণ্য, জাতীয় উদ্যানের আশেপাশের কতটা এলাকা ‘স্পর্শকাতর’? কেন্দ্রের আর্জিতে পুনর্বিবেচনায় সুপ্রিম কোর্ট

ফাইল ছবি: পিটিআই (PTI)

অভয়ারণ্যের আশেপাশের অন্তত এক কিলোমিটার এলাকা 'সংবেদনশীল অঞ্চল'(ইকো সেনসিটিভ জোন বা ESZ)। গত বছরের জুনে সুপ্রিম কোর্ট এই সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেটি বাস্তবায়নের বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি উদ্বেগ প্রকাশ করে। সেই উদ্বেগের পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

জাতীয় উদ্যান এবং অভয়ারণ্যের আশেপাশের অন্তত এক কিলোমিটার এলাকা 'সংবেদনশীল অঞ্চল'(ইকো সেনসিটিভ জোন বা ESZ)। গত বছরের জুনে সুপ্রিম কোর্ট এই সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেটি বাস্তবায়নের বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলি উদ্বেগ প্রকাশ করে। সেই উদ্বেগের পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ গঠন করেছে। আগের আদেশ কি তবে প্রত্যাহার করা যেতে পারে? তার বিবেচনার জন্যই এই বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে।

গত ৩ জুন ২০২২-এ এই রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তাতে সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেই এই নতুন নিয়ম কার্যকর করতে বলা হয়। তবে বাস্তবে জাতীয় উদ্যান এবং অভয়ারণ্যের আশেপাশের এলাকা এভাবে নির্দিষ্ট করার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে বলে দাবি তোলা হয়। এই মর্মে কেন্দ্র এবং কেরল সরকার আলাদাভাবে আবেদন করে। সেখানে বলা হয়, নিয়মে বলা হয়েছে যে, এই স্থানে স্থায়ী নির্মাণ করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রভাবত হবে বলে দাবি করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে ESZ-তে লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস করেন। নতুন নির্দেশিকায় তাদের জীবনে প্রভাব পড়বে। আরও পড়ুন: অসমে পশুদের যাতায়াতের করিডরে মদের দোকান, বিয়েবাড়ি! সরানো হল না এখনও

এই আর্জির প্রেক্ষিতে বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিক্রম নাথের বেঞ্চ বলেন, 'কেন্দ্র সরকার সঠিকভাবে বেঞ্চের কাছে এই বিষয়টি উপস্থাপন করেনি(৩ জুনের সময়ে)।' এই কারণেই শীর্ষ আদালত ন্যূনতম এক কিলোমিটার ESZ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই নিয়মানুসারে উক্ত এলাকায় যে কোনও স্থায়ী নির্মাণ কার্যকলাপ করা যাবে না।

অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল (ASG) ঐশ্বর্য্য ভাটি কেন্দ্রের পক্ষে উপস্থিত হন। তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, ১০২টি জাতীয় উদ্যান রয়েছে। তার মধ্যে ৭৩ টির ESZ নির্ধারণের খসড়া বিজ্ঞপ্তি আপাতত মুলতুবি রয়েছে। গত ৩ জুনের রায়ের কারণে এখনও সীমানা নির্ধারণ করা নিয়ে বিভ্রান্তি আছে।

কেন্দ্রের আবেদনে বলা হয়েছে, অভয়ারণ্য এবং জাতীয় উদ্যানের আশেপাশের এই এলাকায় বহু মানুষের বাসস্থান রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বিহারের বাল্মিকি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের কথা তুলে ধরা হয়। সেখানে অভয়ারণ্যের গা ঘেঁষেই প্রায় ৯ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় ৩২৩টি গ্রাম নিয়ে লম্বা ইকো-সেনসিটিভ জোন রয়েছে। একইভাবে ঝাড়খণ্ডের বেতলা জাতীয় উদ্যানের ESZ-এর মধ্যেই ৩৮২টি গ্রাম রয়েছে। মধ্যপ্রদেশের কানহা জাতীয় উদ্যান এবং ফেন অভয়ারণ্যের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। আরও পড়ুন: কারা সব ঘুরছে গরুমারার জঙ্গলে, তল্লাশিতে কুনকি হাতি, জারি হাই অ্র্যালার্ট

এই বিপুল এলাকায় যদি সুপ্রিম কোর্টের আগের নির্দেশমাফিক স্থায়ী নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে স্কুল, হাসপাতাল, ডিসপেনসারির মতো প্রয়োজনীয় স্থানগুলি পর্যন্ত তৈরি করা যাবে না। ফলে সেখানে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষ ন্যূনতম সুবিধাটুকু পাবেন না। সেই কারণেই এই বিষয়ে আদালতকে পুনর্বিবেচনা করার আর্জি কেন্দ্রের।

বন্ধ করুন