এবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গড় গুজরাত। সেখানের রাজ্য সরকারের কাজকর্মে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের একাধিক উদাহরণ রয়েছে। তা সত্ত্বেও কোভিড হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্য সরকার তাদের নির্দেশিকা তুলে নেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়ল গুজরাত সরকার। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এই নির্দেশিকা হাসপাতালগুলিকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না নেওয়ার আরও সময় দিল। যতদিন ওরা পদক্ষেপ করবে না, এভাবেই রোগীরা জ্বলে–পুড়ে মরবে।’
এই ভর্ৎসনা রীতিমতো দেশে চর্চার বিষয় হযে দাঁড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘যখন আমরা কোনও নির্দেশ দিই তখন তার উপর কোনও প্রশাসনিক নির্দেশিকা চাপানো যায় না। এবার আপনারা বলবেন যে ২০২২ সাল পর্যন্ত হাসপাতালগুলিকে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা অনুসরণ করতে হবে না এবং সাধারণ মানুষ এভাবেই পুড়ে মরে যাবে।’ যদিও আদালতের এই ভর্ৎসনার প্রেক্ষিতে গুজরাত সরকার কোনও উত্তর দিতে পারেনি।
ভরা এজলাসে বিচারপতি চন্দ্রচূড় উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘নাসিকে একজন রোগী সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। পরেরদিনই তিনি ছাড়া পেতেন। দু’জন নার্স শৌচালয় গিয়েছিলেন। অগ্নিকাণ্ডে তারা সকলেই জীবন্ত অবস্থায় পুড়ে মারা যান। এমন বিপর্যয় আমাদের চোখের সামনেই হয়েছে। হাসপাতালগুলি এখন বড় রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তারা সাধারণ মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি করেই বাঁচে।’
গুজরাত সরকারের তীব্র সমালোচনা করে সর্বোচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘এই নির্দেশিকা দেখে মনে হচ্ছে রাজ্য বেআইনি কাজকর্মকেই সুরক্ষা দিচ্ছে।’ এমনকী গুজরাত সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে একটি হলফনামার মাধ্যমে জবাব দিতে বলা হয়েছে। আবার আদালতের নির্দেশে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে হাসপাতালে যে অগ্নি–সুরক্ষা নিয়ে অডিট করা হয়েছিল, তার রিপোর্টও জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে সমালোচনা করে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে রাজকোটে উদয় শিবানন্দ হাসপাতালে আগুন লাগার ঘটনা টেনে আনা হয়। ওই কোভিড হাসপাতালের আইসিইউ–তে আগুন লেগেছিল এবং তা গোটা হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়ে। তদন্তে জানা যায়, হাসপাতালের বিদ্যুৎ লাইনে গণ্ডগোল থাকার কারণেই ওই অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল। গুজরাটের সেই হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আপনাদের মতে সবকিছুই ঠিক রয়েছে। শুধু আপনাদের চিফ ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের রিপোর্টই বিপরীত কথা বলছে।’