সম্ভালে সদ্য একটি কুয়ো নিয়ে এসেছিল স্থানীয় পুরসভার নোটিস। কুয়োটির একটি অংশ ছিল সম্ভালের শাহি জামা মসজিদ চত্বরে, আর বাকি অংশ ছিল চত্বরের বাইরে। সেই কুয়োকে জনতার জন্য খুলে দিতে এসেছিল স্থানীয় পুরসভার নোটিস। এবার সেই কুয়োটিকেই জনতার জন্য খুলে দেওয়ার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে দিল সুপ্রিম কোর্ট।
উত্তর প্রদেশ সরকার ও সম্ভাল প্রশাসনকে সুপ্রিম কোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই কুয়োটি জন সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে। কোর্ট এদিনের বার্তায় জোর দিয়েছে স্থানীয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার উপর। প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই সম্ভালে মসজিদ ঘিরে একটি বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সে প্রেক্ষাপটে প্রবল হিংসা দেখা যায় সম্ভালে। এদিন, সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, যে সম্ভাল পুরসভার তরফে যে নোটিস ইস্যু করা হয়েছে ২০২৪র ডিসেম্বরে, যেখানে কুয়োটি সংস্কার, সম্পত্তির তদন্ত, ও কুয়োটির যে অংশ মসজিদ চত্বরের বাইরে রয়েছে সেই অংশ খুলে দেওয়া সংক্রান্ত বিষয়ের কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে কেউ পদক্ষেপ করবে না।
বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে বলেছে, যে এলাকায় যেন কোনও হিংসা তৈরি না হয় এবং শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় থাকে, তা নিশ্চিত করতে এটি ‘ঘনিষ্ঠ নজরদারি’ করা হচ্ছে। এই মামলায় ২১ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে এবং জেলা প্রশাসনকে দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে। উল্লেখ্য, এই মসজিদের সমীক্ষা ঘিরেই গোটা উত্তেজনা পর্বের সূত্রপাত। গত ২৪ নভেম্বর, ২০২৪ সালে সমীক্ষা ঘিরে হিংসার বাতাবরণ তৈরি হয় উত্তর প্রদেশের সম্ভালে। সেখানে হিংসার জেরে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছিল বহুজন। আহত হয়েছিলেন পুলিশ প্রশাসনের অনেকেই।
এদিনের মামলায় মসজিদের ম্যানেজিং কমিটির তরফে ছিলেন হুজেভা আহমেদি। সেখানে তিনি কুয়ো সম্পর্কে সম্ভালের পুরসভার নোটিসের উল্লেখ করেন। তিনি আদালতকে জেলা প্রশাসনকে কুয়োর তদন্তের বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ার আদেশ জারি করার জন্য আবেদন করেন। এছাড়াও চত্বরের বাইরে থাকা কুয়োর অংশ যাতে আদালতের অনুমতি পেলে তবেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়, তারও আর্জি জানান। এই মামলায় অ্যাডিশনাল সিলিসিটার কে এম নটরাজ বলেন,' এটি রাষ্ট্রের একটি পাবলিক কুয়ো এবং সম্পত্তি। সবকিছু এখন শান্তিপূর্ণ। তারা সমস্যা তৈরি করতে চায়।' আহমদি বলেন,' এটা সবাই ব্যবহার করুক। সর্বোপরি এটা জল, আপনি নিজেই বলছেন এর অর্ধেক মসজিদের ভিতরে আর বাকি অর্ধেক বাইরে। উন্মুক্ত পাশ থেকে কেউ জল ব্যবহার করলে ক্ষতি নেই। সবাই জল ব্যবহার করুক।' এমনই দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বেঞ্চ একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট তলব করেছে এবং আদেশ দিয়েছে যে কুয়ো সম্পর্কিত পুরসভার নোটিশ কার্যকর করা হবে না।