উত্তরপ্রদেশের মথুরায় শ্রী কৃষ্ণ জন্মভূমি এবং শাহি ইদগাহ মসজিদের মধ্যে জমি বিবাদ সংক্রান্ত যতগুলি মামলা চলছে, সেগুলিকে একত্র করার বিষয়ে যে বিচার বিভাগীয় নির্দেশ জারি করা হয়েছে, তাতে কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ করতে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট।
শুক্রবার এই মামলার শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানায়, এই ধরনের ক্ষেত্রে যদি সংশ্লিষ্ট মামলাগুলি একসঙ্গে চালানো হয়, তাহলে সেটাই সবথেকে ভালো। কারণ, সেক্ষেত্রে উভয় সম্প্রদায়েরই স্বার্থরক্ষা করা এবং পরস্পরবিরোধী রায় ঘোষণা করার ঝুঁকি যত দূর সম্ভব কমানোর চেষ্টা করা যায়।
এদিন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি পি ভি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। মামলা প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ হল, একাধিক মামলা এভাবে একত্রিত করলে পুরো প্রক্রিয়াটিই সহজতর হয় এবং বিচারও কেন্দ্রীভূত হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, এই সংক্রান্ত অন্যান্য মামলা ইতিমধ্যেই আদালতের বিচারাধীন রয়েছে। এবং সেই ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের ধর্মীয় প্রার্থনাস্থল (বিশেষ বিধি) আইনটির ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই শীর্ষ আদালতের পক্ষে জানানো হয়, একই ধরনের সবক'টি মামলা চ্য়ালেঞ্জ করা অনর্থক।
এদিনের শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ প্রশ্ন করে, 'কেন আমরা হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরোধিতা করব, যেখানে এই মামলাগুলি একত্র করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে? আমরা আরও বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এই মামলার বিচার করছি। তাতে কী ফারাক হবে? একই ধরনের সব মামলা একত্রে আনা হলে সেটাই তো ভালো। সবকিছুই তো আর চ্যালেঞ্জ করার জন্য হয় না।'
এদিনের শুনানিতে মসজিদ পক্ষের হয়ে উপস্থিত ছিলেন তসনিম আহমেদি। তাঁর যুক্তি ছিল, এভাবে সব মামলাগুলি একসঙ্গে আনা হলে মামলার উপর বস্তুতগত প্রভাব পড়তে পারে। তাই তিনি হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জানানোর দাবি তোলেন।
যদিও আদালতে তাঁর যুক্তি ধোপে টেকেনি। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, 'একাধিক শুনানি হলে অবশ্যই তাতে ভিন্ন ভিন্ন ফল আসবে। তাতে আপনার এবং অন্য পক্ষেরও সুবিধা হবে। তাহলে আগে সেটা হোক। তখন যদি প্রয়োজন হয়, আমরা স্থগিতাদেশ জারি করব। কিন্তু, আমাদের মতামত হল, এই রায় চ্যালেঞ্জ করার কোনও প্রয়োজন নেই।'
প্রসঙ্গত, যে মামলাটি নিয়ে এত কথা হচ্ছে, ইতিমধ্যেই সেটি ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।