বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ২০০৯ সালে দায়ের করা মামলা তুলে নেওয়ার ইঙ্গিত দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে তার আগে প্রকাশ্যে বিচারপতিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা যায় কি না এবং কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সম্পর্কেও যাতে এই ধরণের মন্তব্য করলে সে সম্পর্কে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেই প্রক্রিয়া স্থির করার পরেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সোমবার জানাল শীর্ষ আদালত।
২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তেহলকা পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভূষণ দাবি করেন, ভারতের যে ১০ জন প্রধান বিচারপতি তার আগে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তাঁদের অর্দ্ধেকই দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন। এই মন্তব্যের ভিত্তিতেই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়, সুপ্রিম কোর্টে যার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী সোমবার। আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয় তহলকার সম্পাদক তরুণ তেজপালের বিরুদ্ধেও।
দুর্নীতির অভিযোগ তোলা মানেই আদালত অবমাননা করা হয় কি না, গত অধিবেশনে সেই প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। অন্য দিকে, বর্তমান প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে এবং বিচার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দু’টি টুইট করার জন্য প্রশান্ত ভূষণকে আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে শীর্ষ আদালত।
এ দিন বিচারপতি অরুণ মিশ্রর নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ আদালতের আগের নির্দেশকে আরও বিস্তৃত করে জানায়, ‘আমরা জানতে চাই ঠিক কোন পরিস্থিতিতে দুর্নীতি সংক্রান্ত ওই বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল এবং এই বিষয়ে বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের কথা মাথায় রেখে কী পদ্ধতি গ্রহণ করা যায়, তা-ও নির্দিষ্ট করা হবে।’
গত অধিবেশনে তহলকা সম্পাদক তরুণ তেজপালের তরফে বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, বিষয়টি মুলতুবি রাখাই শ্রেয়। জবাবে বেঞ্চ জানায়, ‘আমরাও মামলা মুলতুবি রাখতে ইচ্ছুক তবে তার আগে জানা দরকার, কোন পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথোপকথনের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো যায়।’
ভূষণের আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান মামলার শুনানি পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে করার আবেদন আগেই জানিয়েছেন। এর জবাবে তিন সদস্যের সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার ধার্য করেছে। সেই সঙ্গে জানিয়েছে, ‘সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানো হলেও আমরা তার আগে সব পক্ষের সওয়াল শুনতে চাই। আমরা কোনও ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে নেই, কিন্তু যদি আমরা দায়িত্ব এড়িয়ে যাই, তা বিচার ব্যবস্থার ভবিষ্যতের পক্ষে ভালো হবে না।’