আফগান মহিলাদের 'রক্ষা' করতে নয়া ভবন নির্মাণ আইন আনল তালিবান। সেই আইন অনুসারে, এবার থেকে আর বাড়িতে জানলা তৈরি করা যাবে না! সোজা কথা হল, এমন কোনও ফাঁকা জায়গা বাড়িতে থাকবে না, যেখান দিয়ে বাড়ির রান্নাঘর, উঠোন কিংবা কুয়ো দেখা যায়!
কেন এই নিদান? কারণ, তালিবান শাসকের মনে হয়েছে, যদি জানলা দিয়ে বাড়ির ভিতরে থাকা মহিলাদের কর্মরত অবস্থায় দেখা যায়, তাহলে তার ফলে কোনও অশালীন ঘটনা ঘটতে পারে। তাই, এবার থেকে নতুন বাড়ি তৈরি করলে সেই বাড়িতে ইচ্ছা মাফিক জানলা তৈরি করা যাবে না।
আফগানিস্তানের তথাকথিত তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সগর্বে তাদের এই নয়া আইন তৈরি ও তা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছে।
তালিবানের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, যাঁরা নতুন বাড়ি নির্মাণ করছেন, তাঁরা সকলে এই নয়া আইন অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন কিনা, তার তদারকি করবে তাদের সরকার ও স্থানীয় পুরসভা কর্তৃপক্ষ। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে এই খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
এমনকী, যদি কোনও বাড়িতে আগে থেকেই জানলা থাকে, তাহলে সেখানেও দেওয়াল গেঁথে দেওয়া হবে। বা অন্য কোনও উপায়ে ওই জানলা চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দাবিহুল্লাহ।
এখানেই শেষ নয়। আফগানিস্তানের মাটিতে যাতে কোনও বেসরকারি এনজিও বা সংস্থা মহিলাদের নিয়োগ না করে, এবার সেই ব্যবস্থাও পাকা করেছে তালিবান। উল্লেখ্য, এর ঠিক দু'বছর আগে তালিবান ফতোয়া জারি করেছিল, কোনও এনজিও আফগান মহিলাদের নিয়োগ করতে পারবে না। কারণ, ওই মহিলারা নাকি ঠিকমতো হিজাব পরেন না!
রবিবার রাতে এই বিষয়ে তালিবানের তরফে একটি চিঠি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করা হয়েছে। তাদের হুঁশিয়ারি, যদি এরপরও কোনও এনজিও মহিলাদের নিয়োগ করে, তাহলে আফগানিস্তানে তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, তালিবানের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়, এমন সমস্ত সংস্থায় মহিলাদের নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। না হলে তার ফল ভোগ করতে হবে। সোজা কথায় সেই সংস্থায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালিবানের প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই সেখানকার মহিলাদের জীবন যাপন কার্যত নরক যন্ত্রণায় পর্যবসিত হয়েছে। মহিলাদের বাড়ি থেকে একা বের হওয়া, জোরে কথা বলা, উপার্জন করা-সহ সবকিছু নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী, ষষ্ঠ শ্রেণির পর মেয়েদের পড়ার স্কুল পর্যন্ত নেই!