তালিবান প্রথাম থেকেই পাকিস্তানকে বন্ধু আখ্যা দিয়ে এসেছে। পাকিস্তানের বহু নেতার মুখেও শোনা গিয়েছে তালিব বন্দনা। অপরদিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল গণতন্ত্রপ্রেমী সাধারণ আফগান মানুষ এবং সালেহ, মাসুদের মতো বিদ্রোহীরা। তবে সালেহ, মাসুদদের মতো এবার পাকিস্তানের উপর অসন্তুষ্ট তালিবান মন্ত্রীও। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে যা থেকে মনে করা হচ্ছে যে তালিবান-পাকিস্তান বন্ধুত্বে চিড় ধরে থাকতে পারে।
সম্প্রতি একটি ভয়েস ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে যাতে দাবি করা হচ্ছে যে তালিবান নেতা তথা তালিবান সরকারের ডেপুটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোল্লাহ ফজেল আখুন্দ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। অডিয়ো ক্লিপে শোনা যাচ্ছে আখুন্দ বলছেন, 'আফগান ভাবমূর্তি নষ্ট করছে পাকিস্তান। ওরা সব শেষ করে দিল। আফগানিস্তানের ভবিষ্যত নষ্ট করে দিয়েছএন আইএসআই প্রধান হমিদ ফইজের কাবুল সফর। আফগানিস্তান ফের একটি যুদ্ধের মুখে দাঁড়িয়ে।'
জানা গিয়েছে, পাকিস্তান যেভাবে আফগানিস্তানের সরকার গঠনের বিষয়ে নাক গলাচ্ছে, তা মেনে নিতে পারছে না তালিবানের একাংশ। আইএসআই প্রধান কাবুল থেকে ফিরতেই নয়া সরকারের ঘোষণা করে তালিবান। পাকিস্তান চাইছে তালিবান সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় যাতে হক্কানিরা থাকে। হক্কানি গোষ্ঠীকে দীর্ঘদিন ধরেই আইএসআই-এর 'প্রক্সি' বাহিনী বলে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এর আগে পাকিস্তানের ইশারাতেই কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসের উপর হামলা চালিয়েছিল হক্কানি গোষ্ঠী। নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা এহেন হক্কানি গোষ্ঠীর সিরাজউদ্দিন হক্কানিকে তালিবানি মন্ত্রী করে পাকিস্তানে আদতে সেদেশের ক্ষমতা নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে বলে আশঙ্কা অনেকেরই।
এদিকে তালিবান প্রথমিক ভাবে জানিয়েছিল যে তাজিক, উজবেক ও সংখ্যালঘু হাজারা সম্প্রদায় ও পুরনো আমলের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নয়া সরকারের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তালিবানকে একঘরে করে দিচ্ছে ইসলামাবাদ। জানা গিয়েছে আইএসআই প্রধানের কথাতেই হাক্কানি নেটওয়ার্ক ও কোয়েত্তা সুরা গোষ্ঠীর সদস্যদের নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের সরকারের উফর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে তালিবানই।