আফগানিস্তানের নানা প্রান্তে একাধিক প্রাণঘাতী হামলা চালানোর জন্য সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট)-এর কয়েক 'প্রধান সদস্য'কে নাকি গ্রেফতার করেছে তালিবান সরকার।
তাদের আরও দাবি, প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান আইএস-কে আশ্রয় দিচ্ছে বলেই আফগানিস্তানে বারবার সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা ঘটছে।
সোমবার আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের এক মুখপাত্র এই তথ্য সামনে এনেছেন। ওই মুখপাত্রের দাবি, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালিবানের শাসন পুনরায় কায়েম হওয়ার পর থেকেই সামগ্রিকভাবে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে।
তবে, বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে আইএস-কে (ইসলামিক স্টেট - খোরাসান)-এর মতো সংগঠনের প্রভাব ও প্রতিপত্তি রয়েছে। ফলে সেই সমস্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে গিয়ে তাঁরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলেও দাবি করেছেন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের ওই মুখপাত্র।
তিনি আরও জানান, নিরাপত্তাবাহিনীর লাগাতার ও ব্যাপক অভিযানের ফলে অভ্যন্তরীণ হামলার ঘটনা অনেকটাই বাগে আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু, চলতি গ্রীষ্মে বহু জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে হামলা চালিয়েছে আইএস-কে জঙ্গিরা।
জাবিউল্লা মুজাহিদ নামে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের ওই মুখপাত্র এই প্রসঙ্গে দাবি করেন, 'বিশেষ বাহিনী'র অভিযানে আইএস-কে গোষ্ঠীর 'কয়েকজন প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে' পাকড়াও করা হয়েছে।
ধৃতদের মধ্যে সেই অভিযুক্তরাও রয়েছে, যারা চলতি মাসেই কাবুলে একটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেই হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ছ'জনের।
তালিবান সরকারের ওই মুখপাত্র আরও দাবি করেন, হামলাকারীরা আফগানিস্তানের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করার আগে পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। তাঁর আরও দাবি, বিশেষ বাহিনীর অভিযানে যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারাও সকলেই সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে ফিরেছিল।
তালিবানি মুখপাত্রের আরও দাবি, তাদের সরকার আফগানিস্তান থেকে সুন্নি জিহাদিদের তাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু, তারা পাকিস্তানের মাটিতে নতুন প্রশিক্ষণ শিবির খুলেছে এবং সেখানেই পরবর্তী হামলা চালানোর জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে।
আফগানিস্তানের এহেন অভিযোগে পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক আরও খারাপ হবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
উল্লেখ্য, ইসলামাবাদ ইদানীংকালে বারবার অভিযোগ করেছে, আফগানিস্তান থেকে আসা সন্ত্রাসবাদীরাই পাকিস্তানে প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে। এবার, পালটা পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ তুলল আফগানিস্তান।
এখন পাকিস্তানের সরকার এর কী জবাব দেয়, সেটাই দেখার। যদিও ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ইসলামাবাদ যে কাবুলের অভিযোগ স্বীকার করবে না, সেটাই স্বাভাবিক। উপরন্তু, এর ফলে পাক-আফগান সীমান্তে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। যার খেসারত দুই দেশের মানুষকেই চোকাতে হবে।