আফগানিস্তানে মহিলাদের ওপর ইতিমধ্যেই চেপেছে নানান তালিবানি ফতোয়া। কার্যত কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়া হল, সেদেশের একমাত্র মহিলা কেন্দ্রিক রেডিও স্টেশন ‘রেডিও বেগম’কে বন্ধ করে দিয়ে। তালিবান সরকারের দাবি, নীতি বিরুদ্ধ কাজ করেছে রেডিও বেগম। এছাড়াও সংস্থা অবৈধভাবে লাইসেন্স ব্যবহার করে গিয়েছে।
আফগানিস্তানের বুকে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচারের খ্যাতি রয়েছে রেডিও বেগমের। সেখানে মহিলাদের জন্য অনুষ্ঠান সম্প্রচার হত। মহিলা দ্বারা তা পরিচালিত হত। চলত বই পাঠের আসর। তালিবান আফগানিস্তানে দ্বিতীয়বার আসার বহু আগে, মার্চের ৮ তারিখে ২০২১-এ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পথ চলা শুরু করেছিল এই চ্যানেল। তার ৫ মাস পরই তালিবান ক্ষমতায় আসে আফগানিস্তানে। কড়াভাবে সেদেশে লাগু হয় ইসলামি আইন। মহিলাদের ওপর একাধিক বিধি লাগু করে তালিবান। এদিকে, তারই মধ্যে ২০২৪ সালে রেডিও বেগমের প্রতিষ্ঠাতা সুইস-আফগান মহিলা হামিদা আমান একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনও লঞ্চ করেন। তা বেগম টিভি নামে পরিচিত। সেখানে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান দেখানো হয়। প্যারিস থেকে সম্প্রচার হওয়া এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের মহিলারা যাতে ফের পড়াশোনা-মুখী হয়, তার চেষ্টা করা হয়।
এদিকে, জানা গিয়েছে, রেডিও স্টেশনে তল্লাশি চালিয়েছে আফগানিস্তানের বর্তমান ‘জেনারেল ডিরোক্টোরেট অফ ইন্টালিজেন্স’। রেডিও স্টেশনের ২ পুরুষ কর্মীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, তাঁরা কেউই সংস্থার সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের অংশ নন। এছাড়াও অফিস থেকে ফোন, হার্ড ড্রাইভ, কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তালিবান জানিয়েছে,'একাধিক বিধি লঙ্ঘনের পাশাপাশি, এটি বিদেশে ভিত্তিক একটি টিভি স্টেশনকে উপকরণ এবং অনুষ্ঠান সরবরাহ করছিল।' তালিবানের দাবি, ‘সম্প্রচার নীতি লঙ্ঘন এবং লাইসেন্সের অনুপযুক্ত ব্যবহারের কারণে, রেডিও স্টেশনটি আজ স্থগিত করা হয়েছিল যাতে সংশ্লিষ্ট নথিগুলি যত্ন সহকারে মূল্যায়ন করা যায় এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।’ রেডিও স্টেশনের তরফে গ্রেফতার হওয়াদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।