মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথে হেঁটে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে আইএএস আইনে সংশোধনী আনতে বারণ করলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। দুই মুখ্যমন্ত্রীরই বক্তব্য, এই সংশোধনী আনা হলে যুক্তরাষ্ট্রী কাঠামোতে পারস্পরিক সহযোগী নীতির মূলে আঘাত হানা হবে। উল্লেখ্য, এর আগে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও এই সংশোধনী আনতে বারণ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন।
নিজের চিঠিতে তামিলনাড়ুর মুখ্য স্ট্যালিন লেখেন, ‘রাজ্য স্তরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের কাঁধে৷ অনেক রাজ্য আবার ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়৷ এই সব ক্ষেত্রে রাজ্যে আইএএস অফিসারদের পরিষেবার চাহিদা অন্য জায়গার চেয়ে বেশি৷ এই ধরনের পরিস্থিতিতে কর্মকর্তাদের ডেপুটেশনের জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে বাধ্য করা হলে তা বিভিন্ন রাজ্যে 'শাসন ব্যবস্থায় ঘাটতি' বাড়িয়ে তুলবে এবং এটা রাজ্যগুলির প্রশাসনিক কাঠামোর জন্য 'অপমানের'।’
এদিকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন দাবি করেন, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের জেরে সঞ্চার হবে সিভিল সার্ভিস আধিকারিকদের মধ্যে। এর জেরে রাজ্য সরকারের নীতিগুলিকে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে সেই ‘ভয়’ বাধা হয়ে দাঁড়াবে। নিজের চিঠিতে বিজয়ন লেখেন, ‘অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেসের ডেপুটেশন বিধিতে প্রস্তাবিত সংশোধনীর জেরে অল ইন্ডিয়া সার্ভিসের অফিসারদের মধ্যে একটি ভয়ের মানসিকতা এবং দ্বিধা দেখা দেবে। যেই রাজ্যে কেন্দ্রের শাসকদল বিরোধীল দল সরকার চালায়, সেখানে এই সংশোধনী রাজ্য সরকারের নীতি বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করবে আধিকারিকদের।’
উল্লেখ্য, এর আগে আইএএস, আইপিএস এবং আইএফএস অফিসারদের কেন্দ্রে বদলিতে যেতে হলে রাজ্যের সম্মতি আবশ্যিক ছিল। কিন্তু যে নয়া সংশোধনীতে আনা হচ্ছে, তাতে আর রাজ্যের সম্মতি নেওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক থাকবে না। এতেই আপত্তি তুলেছে রাজ্যগুলি। এভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়বে বলে মনে করছেন রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা। একতরফা ভাবে আধিকারিক বদলি করার ক্ষমতা যদি কেন্দ্রের হাতি থাকে, তাতে রাজ্যগুলির কার্যক্ষমতা খর্ব হবে বলে অভিযোগ।