বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই লারসেন অ্যান্ড টুব্রোর চেয়ারম্যান এসএন সুব্রহ্মণ্যনের '৯০ ঘণ্টা কাজ' মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক জারি আছে। এই নিয়ে বেশ কয়েকজন শিল্পপতি নিজেদের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। সেই মন্তব্যের জন্যে সামলোচিত হয়েছেন সুব্রহ্মণ্যন। তবে এবার টিসিএস সিইও কৃতিবাসন এল অ্যান্ড টি চেয়ারম্যান সুব্রহ্মণ্যনকে কার্যত সমর্থন করলেন। তিনি বলেন, 'একজন ব্যক্তি কী বলতে চেয়েছেন, সেই বিষয়টি বুঝতে হবে। আমরা এখন শুধুমাত্র মিম যুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছি। এমন এক ব্যক্তি যিনি এত বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করে এত কিছু অর্জন করেছেন, তাঁকে নিয়ে এমন আচরণ সঠিক নয়।' তিনি আরও বলেন, 'তিনি কী বলেছেন, সেটা আউট অফ কন্টেক্সট নেওয়া ঠিক না। সেটা তাহলে বক্তার প্রতি অবিচার হবে।' (আরও পড়ুন: আচমকা বন্ধ হল FITJEE-র একের পর এক কোচিং সেন্টার, মাথায় হাত পড়ুয়াদের!)
আরও পড়ুন: নিয়মের নামে পকেট কাটার চেষ্টা? জিও-Vi-এয়ারটেলকে পাশ করতে হবে TRAI-এর পরীক্ষা
টিসিএস সিইও বলেন, 'এমন অনেক সপ্তাহ গিয়েছে যেখানে আমি ৬০ ঘণ্টা কাজ করেছি। আবার অনেক সপ্তাহ গিয়েছে যেখানে আমি মাত্র ৪০ ঘণ্টা কাজ করেছি। অনেক সপ্তাহে আমরা রবিবারও কাজ করেছি। হয়ত সোমবার কোনও একটি বিষয় লাইভ হবে, তখন রবিবারও কাজ হয়েছে। আবার অনেক সময় বৃহস্পতিবার, শুক্রবারও কাজ হয় না। কারণ সেই সপ্তাহে ততটা কাজ নেই।' (আরও পড়ুন: চাকরি ছাড়ার হার বেড়েছে IT সেক্টরে, কত ফ্রেশার নিয়োগের পরিকল্পনা সংস্থাগুলির?)
আরও পড়ুন: রুশ তেলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়বে ভারতে? জবাব দিলেন ইন্ডিয়ান অয়েল প্রধান
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ চলাকালীন সুব্রহ্মণ্যনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন লারসেন অ্য়ান্ড টুব্রোর মতো মাল্টি-বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি সংস্থা এখনও কর্মীদের শনিবার কাজ করাচ্ছে? তার জবাবে সুব্রহ্মণ্যন নাকি বলেছিলেন, 'আমার এটা ভেবে অনুশোচনা হচ্ছে যে আমি আপনাদের দিয়ে রবিবারও কাজ করাতে পারছি না। আমি যদি আপনাদের দিয়ে রবিবারও কাজ করাতে পারতাম, তাহলে আমি খুশি হতাম। কারণ, আমি রবিবার কাজ করি। বাড়িতে বসে আপনারা কী করবেন? কতক্ষণ নিজের বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকবেন? ধুর, অফিসে চলে যান। কাজ করুন।' এরপরই সুব্রহ্মণ্যন তাঁর এক অভিজ্ঞতা কর্মীদের সঙ্গে শেয়ার করে বলেন, 'একবার এক চিনা ব্যক্তির সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তিনি দাবি করেছিলেন, চিন অনায়াসেই আমেরিকাকে হারিয়ে দিতে পারে। কারণ, চিনারা সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করেন। সেখানে মার্কিনিরা সপ্তাহে মাত্র ৫০ ঘণ্টা কাজ করেন। তাই আপনাকে যদি বিশ্বের সেরা হতে হয়, তাহলে প্রত্যেক সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা করে কাজ করতেই হবে। আপনারা সেটা শুরু করে দিন।' পরে সুব্রহ্মণ্যনের এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্কের ঝড় ওঠে। এবং অনেক শিল্পপতি এই নিয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন। (আরও পড়ুন: ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কমছে হু হু করে,পড়শি বাংলাদেশের পকেটে এখন কত ডলার?)
আরও পড়ুন: আদানির চাপে চোখে অন্ধকার, আঁধার মেটাতে বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে $৩ কোটির ঋণ বাংলাদেশের
পরে এই বিতর্ক নিয়ে লারসেন অ্য়ান্ড টুব্রোর হিউম্যান রিসোর্স প্রধান সোনিকা মুরলীধরন দাবি করেন, সংস্থার চেয়ারম্যানের মন্তব্যের পুরোপুরি ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ওই মন্তব্যের আগে কী বলেছেন, পরে কী বলেছেন, সেইসব বিবেচনা না করেই তাঁকে নিয়ে অহেতুক সমালোচনা করা হচ্ছে। কখনওই সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজের ‘নিদান’ দেননি বা ঘুরিয়েও সেটা বলতে চাননি। একেবারে হালকা চালে সুব্রহ্মণ্যন সেই মন্তব্য করেছিলেন বলে দাবি করেছেন সোনিকা। সোনিকার কথায়, 'উনি প্রত্যেক কর্মীকে নিজের বর্ধিত পরিবারের অংশ হিসেবে বিবেচনা করেন। একতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বোধ জাগিয়ে তোলেন, যা আজকের কর্পোরেট দুনিয়ায় বিরল।' তবে তাতেও বিতর্ক থামার নাম নেই।