অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে গভীর রাতে বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই বৈঠকের পর থেকেই অন্ধ্রের রাজনৈতিক সমীকরণে বদলের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এমনিতে অন্ধ্র্রের শাসকদল ওয়াইএসআরসিপি বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তবে তারা এনডিএ-র অংশ নয়। তবে সংসদে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজেপিকে সরাসরি বা পরোক্ষ ভাবে সাহায্য করে থাকে জগন্মোহন রেড্ডির দল। এদিকে এককালে এনডিএ জোটে ছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু। যদিও বিগত কয়েক বছরে তিনি বিজেপি বিরোধী নেতা হিসেবেই নিজের ভাবমূর্তি তৈরি করেছেন। এই পরিস্থিতি শাহের সঙ্গে তাঁর বৈঠক ঘিরে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, গতরাতের বৈঠক প্রায় একঘণ্টা ধরে চলে। তবে জোট সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
দীর্ঘদিন এনডিএ-র শরিক ছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু। তবে বিগ তকয়েক বছরে বিজেপি বিরোধিতার সুরই শোনা গিয়েছিল তেলুগু দেশম পার্টির প্রধানের গলায়। ২০১৯ সালে মমতার মস্তিষ্কপ্রসূত বিজেপি বিরোধী তৃতীয় ফ্রন্টের অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি। তবে ২০১৯ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের নির্বাচনে ভরাডুবি হয় তাঁর। রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হন। লোকসভাতেও ২৫টির মধ্যে মাত্র ৩টি আসনে জয়ী হয় তাঁর দল। এরপর থেকে জাতীয় রাজনীতিতে প্রায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যান চন্দ্রবাবু। এদিকে তাঁর বিরোধী জগন্মোহন রেড্ডি হয়ে ওঠেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ। এই আবহে অমিত শাহের সঙ্গে চন্দ্রবাবু নাইডুর বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মনে করা হচ্ছে, ২০২৪ সালে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে পারে টিডিপি। উল্লেখ্য, অন্ধ্রপ্রদেশে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই হওয়ার কথা বিধানসভা নির্বাচনের। এই আবহে সেই রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরতে বিজেপির সাহায্য চাইতে পারে চন্দ্রবাবু। এদিকে অন্ধ্রে নিজেদের পায়ের তলার জমি শক্ত করতে চাইছে বিজেপি। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালেই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ টেনেছিলেন চন্দ্রবাবু। তাঁর অভিযোগ ছিল, অন্ধ্রকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে গরিমসি করছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে ২০১৯ সালের নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের ইঙ্গিত দিয়ে আসছিল টিডিপি। এর আগে এপ্রিলে চন্দ্রবাবুর গলায় শোবা গিয়েছিল মোদী বন্দনা। এমনকী তিনি এও বলেছিলেন, 'দেশ গড়ে তোলার কাজে মোদীর সঙ্গে জুড়তে চাই আমি।' এই আবহে চন্দ্রবাবুর সঙ্গে বিজেপি ফের জোট বাঁধলে তা পদ্ম শিবিরের জন্য লাভদায়ক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।