বাড়ি বাড়ি ঘিরে দরিদ্র পরিবারগুলোকে খুঁজে বের করবে কেন্দ্র। শহুরে দারিদ্র্যকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে, ঘরে ঘরে সমীক্ষা শুরু করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সমীক্ষা চালানোর জন্য ছয়টি দলের উপর আলাদা আলাদা ভাবে ফোকাস করে। যেমন, শহরে কতজন গৃহকর্মী কাজ করছেন, তারও একটা তালিকা তৈরি হবে। যাঁরা খাবার বা পণ্য ডেলিভারি করেন, তাঁদের মতো 'গিগ ওয়ার্কার'দের দিকেও নজর দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: (Sensex Prediction: ‘২০২৪ সালে সেনসেক্স ১ লক্ষ ছুঁতে পারে যদি সেবি…’ মার্ক মোবিয়াসের ভবিষ্যদ্বাণী)
কোন শহরে কবে থেকে চালানো হবে সমীক্ষা
১ অক্টোবর থেকেই, শুরু হচ্ছে এই সমীক্ষা। আপাতত ভারতের ২৫ শহরে সমীক্ষাটি পরিচালনা করা হবে৷ এই শহরগুলির মধ্যে কয়েকটি হল চেন্নাই, বিশাখাপত্তনম, আগ্রা, ইন্দোর এবং বারাণসী। এদের মধ্যে কলকাতাও কিন্তু রয়েছে। এক আধিকারিক উল্লেখ করেছেন যে প্রতিটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে কমপক্ষে একটি এমন শহরকে প্রকল্পের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। তবে, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন কোনও রাজ্যকে এই কর্মসূচির অধীনে আনা হবে না।
কোন কোন শ্রেণীর কর্মীদের উপর ফোকাস করা হবে
নির্মাণ বা কনস্ট্রাকশনের কাজে নিযুক্ত শ্রমিক, গিগ বা ডেলিভারির কাজে নিযুক্ত শ্রমিক, বর্জ্য পরিষ্কারের কাজে নিযুক্ত কর্মী, পরিচর্যার কাজ করা কর্মী, গৃহকর্মী এবং পরিবহন ব্যবস্থার কর্মী সহ দুর্বল গোষ্ঠীগুলির উপর ফোকাস করা হবে। শহুরে দারিদ্র্য হ্রাস করার লক্ষ্যে এই নতুন কর্মসূচির উদ্যোগ। এই কর্মসূচির জন্য বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা এবং এটি তিন মাস ধরে চলবে৷
আরও পড়ুন: (Supreme Court: কোর্টের মধ্যে ইয়া! ইয়া! একদম বলবেন না, আইনজীবীকে মনে করালেন প্রধান বিচারপতি)
এই সমীক্ষার সুবিধা কী হবে
আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রকের (MoHUA) একজন ঊর্ধ্বতন অধিকর্তার মতে, একবার সমীক্ষা এবং প্রোফাইলিং সম্পূর্ণ হয়ে গেলে, পুরো পরিবারকে সাহায্য করার জন্য বীমার মতো বিভিন্ন সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, দরিদ্র মানুষের হাতের মুঠোয় পৌঁছে দেওয়াও সহজ হবে। সংগৃহীত তথ্যের সাহায্যে, বর্তমানে চলমান দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা - ন্যাশনাল আরবান লিভলিহুড মিশনের পরিবর্তে, আরও বেশি সুবিধাজনক এবং নতুন প্রোগ্রাম লঞ্চ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
- যে দরিদ্র ব্যক্তিরা নিজস্ব ব্যবসা শুরু করার জন্য লোন নেবেন, তাঁদের সর্বাধিক ঋণের পরিমাণ ২ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৪ লক্ষ টাকা করা হবে।
- নতুন প্রোগ্রামটির অধীনে, উদ্যোক্তার দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করার জন্য ট্রেনিং দেওয়া হবে।
- আর্থিক এবং ডিজিটাল ট্রেনিংও দেওয়া হবে।
- গ্রুপ লোনের সীমা ১০ লক্ষ টাকা থেকে বেড়ে ২০ লক্ষ টাকা হবে।
আরও পড়ুন: (Assam News: বুলডোজার নীতি প্রয়োগ করে উচ্ছেদের চেষ্টা অসমে, স্থগিতাদেশ জারি করল আদালত)
কবে শুরু হবে এই নতুন প্রোগ্রাম
প্রসঙ্গত, মন্ত্রক এই পাইলট প্রোগ্রামের জন্য ২৩ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন রাজ্য এবং শহরের আধিকারিকদের সঙ্গে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল। কর্মশালায়, সেক্রেটারি শ্রীনিবাস কাতিকিথালা যে শহুরে দরিদ্রদের, বিশেষত তরুণরা যাতে আরও ভাল কাজের সুযোগ পেতে পারেন, তার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। তবে, সমীক্ষার পর এই নতুন প্রোগ্রাম কবে শুরু হবে তার কোনও নির্দিষ্ট সময় জানাননি।
এদিকে, শহুরে দারিদ্র্য কর্মসূচির বিশেষজ্ঞ অরবিন্দ উন্নি বলেছেন যে সুবিধাজনক স্কিমের অধীনে আরও দুর্বল গোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা, একটি ভালো পদক্ষেপ। তিনি বিশ্বাস করেন দিন দয়াল যোজনার পরবর্তী ভার্সন, যা নিয়ে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে কথা বলা হচ্ছে, শীঘ্রই চালু করা উচিত।
দীন দয়াল যোজনার সাফল্য
সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সালের জুনে দীন দয়াল যোজনা চালু হওয়ার পর থেকে, এই বছরের জুন পর্যন্ত, মোট ১০ বছরে, প্রায় ৩.৭ মিলিয়নেরও বেশি চাকরির সুযোগ তৈরি করা হয়েছে, এবং ৯.৬ মিলিয়ন স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠিত হয়েছে। উপরন্তু, প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ দক্ষতা প্রশিক্ষণও পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: (
দরিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী মানুষের জন্য আপাতত আট সরকারি প্রকল্প
- প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা (জীবন বীমা)
- প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা বিমা যোজনা (দুর্ঘটনা বীমা)
- প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা (সবার জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট)
- ওয়ান নেশন ওয়ান রেশন কার্ড (সবার জন্য খাবারের সুবিধা)
- প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মানধন যোজনা (কর্মীদের জন্য পেনশন)
- বিল্ডিং এবং অন্যান্য নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য নিবন্ধন
- জননী সুরক্ষা যোজনা (মাতৃত্ব সুবিধা)
- প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা (মায়েদের জন্য সহায়তা)
জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত, ৩.৩৫ মিলিয়নেরও বেশি রাস্তার বিক্রেতা বা স্ট্রিট সেলার এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হয়েছেন।