আমরা অনেকেই ছোটবেলায় বা কোনও না-কোনও সময় পিঙ্কি প্রমিস বা পিঙ্কি সোয়ের করেছি। না-করে থাকলে এর নাম শুনেছি। একে অপরের কনিষ্ঠা আঙুল জড়িয়ে কোনও প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হওয়াই পিঙ্কি প্রমিস নামে খ্যাত। বহু সময় একে অপরকে করা এই পিঙ্কি প্রমিস পুরো করা যায়নি বা সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গও করতে হয়েছে। কিন্তু পিঙ্কি প্রমিসের প্রচলন কবে থেকে শুরু এবং এর পিছনের কাহিনি কী জানা আছে?
বহুল প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার চল শুরু হয়েছিল জাপানে। যেখানে এটি ইউবিকিরি নামে প্রসিদ্ধ। এই ইউবিকিরির অর্থ আঙুল কাটা। এক সময় জাপানে প্রচলিত ছিল, কোনও ব্যক্তি পিঙ্কি প্রমিস ভঙ্গ করলে, নিজের পিঙ্কি ফিঙ্গার অর্থাৎ কনিষ্ঠা আঙুল কেটে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের মূল্য দিতে হবে। অনেকে আবার এ-ও মনে করেন, ইয়াকুজা অর্থাৎ জাপানি মাফিয়া এই রীতি চালু করেছিল। জাপানে ষোড়শ শতাব্দীর কাছাকাছি এই প্রথার চল শুরু হলেও আমেরিকায় ১৮৬০ সাল পর্যন্ত এর প্রচলন ছিল।
বর্তমানে এটি প্রতিশ্রুতি বাঁচিয়ে রাখার অনানুষ্ঠানিক প্রথায় পরিণত হয়েছে। স্কুল, কলেজের বন্ধুবান্ধবরা প্রায়ই পিঙ্কি প্রমিস করে থাকে। তবে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের কারণে নিজের সাধের কনিষ্ঠা খোয়ানোর কোনও রীতি আর প্রচলিত নেই।
প্রাচীন কালে পিঙ্কি প্রমিসের বিকল্পের উল্লেখও পাওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের শাস্তি স্বরূপ কনিষ্ঠা খোয়ানোর কোনও উদাহরণ নেই। প্রাচীন হিব্রু সংস্কৃতিতে কোনও ব্যক্তি যদি কাউকে প্রতিশ্রুতি দিতে ইচ্ছুক থাকতেন, তা হলে সেই ব্যক্তির জঙ্ঘা স্পর্শ করে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়ার চল ছিল। আবার কোথাও রক্ত দিয়ে প্রতিশ্রুতি লেখারও উদাহরণ পাওয়া যায়।
তবে ভবিষ্যতে কখনও পিঙ্কি প্রমিসের জন্য কনিষ্ঠা আঙুল বাড়ালে একবার ভেবে দেখতে পারেন। উল্লেখ্য, বর্তমানে এ ধরণের অদ্ভূত রীতিনীতির আর কোনও অস্তিত্ব নেই।