কেরলের ওয়েনাড়ে ভয়াবহ ভূমিধস কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। কিন্তু কীভাবে জানা গেল এই ভূমিধসের ব্যাপারটা?
সূত্রের খবর, নীথু জোজো নামে এক মহিলা রাত দেড়টা নাগাদ প্রথম ফোন করে বলেন যে ধস নামছে। তিনি চূড়ালমালার বাসিন্দা। তিনি গভীর রাতে শুনেছিলেন কিছু যেন নেমে আসছে। বিরাট পাথর গড়িয়ে আসার শব্দ। প্রচন্ড জলের ঝাপটা। সেই সময় তিনি ওয়েনাড ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে ফোন করেন। সেখানেই কর্মরত ছিলেন তিনি।
ঠিক কী হয়েছিল ঘটনাটি?
ওই সংস্থার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শানাভাস পাল্লিয়াল টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, রাত দেড়টা নাগাদ নীথু ফোন করেন। তিনি বলেন, বিরাট ধস নেমেছে এলাকায়। গোটা এলাকা জলে ডুবে যাচ্ছে। একটা গাড়ি পাঠানোর জন্য তিনি অনুরোধ করেন।
এরপর পাল্লিয়াল নীথুকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তিনি বলেন গাড়ি যাচ্ছে। তুমি চিন্তা করো না। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। পরে নীথুর দেহ উদ্ধার করা হয়।
পাল্লিয়াল জানিয়েছিলেন, আমি কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেছিলাম। এরপর আমি থানায় ফোন করি। কিন্তু লাইন ব্যস্ত ছিল। এরপর কালপেট্টা থানায় ফোন করি। কিন্তু সেখানকার পুলিশ কিছুই জানত না। এরপর ১০০ ডায়াল করি। এরপর থিরুবনন্তপুরম কন্ট্রোল রুমকে জানাই।এদিকে একটি অ্যাম্বুল্যান্সকে পাঠানো হয়। কিন্তু ব্রিজের কাছে গাছ পড়ে থাকায় অ্যাম্বুল্যান্স যেতে পারেনি।
এরপর একটি ছোট অ্যাম্বুল্যান্স ঘটনাস্থলে যেতে পারে। এদিকে নীথু তার স্বামীকে বলেছিল সন্তানদের নিয়ে উঁচু জায়গায় চলে যেতে। এরপর তিনি বলেছিলেন আমি পেছনেই যাচ্ছি। তিনি আরও প্রতিবেশীদের বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই পরোপকারী স্বভাবের জন্য তিনি নিজের জীবন দিলেন। ভোর ৪টের সময় আবার বিপর্যয় নামে। পাল্লিয়াল বলেন, তিনি আবার ফোন করেছিলেন। কিন্তু আতঙ্কিত গলার স্বর শুনতে পান তিনি। গোটা নদীর গতিপথই বদলে গিয়েছে। বিরাট জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছেন তারা।
এরপর স্থানীয় একটা ঝর্ণার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ওই মহিলার দেহ। চুড়ি দেখে দেহ শনাক্ত করেছিলেন তার স্বামী।