জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তপস্যায় বসেছিলেন এক সন্ন্যাসী। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন তিনি। ভক্তদের কাছে ‘কামলিওয়ালে পাগলা বাবা’ নামে পরিচিত ছিলেন ওই সন্ন্যাসী। তিনি গত ২১ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের সম্বলে তপস্যায় বসেছিলেন। তবে তপস্যা শেষ হওয়ার একদিন আগেই আচমকা তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর কারণ হিসেবে হিট স্ট্রোকের কথা উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ধ্বংস হতে পারে হিন্দুকুশ পাহাড়ের জীবজগৎ
৭২ বছর বয়সি এই সন্ন্যাসী জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও বিশ্ব শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ, মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি চেয়ে ‘পঞ্চ-অগ্নি তপস্যা’য় বসেছিলেন। সম্বলের মহকুমা শাসক বিনয় কুমার মিশ্র জানান, তপস্যার জন্য তিনি অনুমতি নিয়েছিলেন। ২৩ মে তিনি তপস্যা শুরু হয়েছিল এবং সোমবার ২৭ মে তা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে রবিবার তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। সেই অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
তাঁর শিষ্য রাজেন্দ্র প্রসাদ তিওয়ারি জানান, ‘বাবা বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং গ্রহের ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। মানবজাতির কল্যাণের জন্য তিনি তপস্যা করছিলেন। আর হিট স্ট্রোকে মারা গিয়েছিলেন।’ তাঁর কথায়, ‘বাবা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য তপস্যা করছিলেন। আরও দুঃখজনকভাবে আবহাওয়াই তাঁর জীবন কেড়ে নিল।’
প্রসঙ্গত, চারপাশে আগুন ধরিয়ে তার মাঝখানে বসে তপস্যা করছিলেন ওই সন্ন্যাসী। তার ওপর তীব্র গরম থাকায় তিনি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, ওই সন্ন্যাসী আমেঠির বাসিন্দা। এর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে ২৫ বছরে অন্তত ২৩ বার এই ধরনের তপস্যা করেছিলেন। তিনি কৈলাদেবী থানার বেণীপুর চক গ্রামের একটি আশ্রমে থাকতেন। স্থানীয়রা জানান, প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও একটি মাঠে তপস্যায় বসেছিলেন তিনি। একজন গ্রামবাসী জানান, গত কয়েকদিন ধরেই সম্বলের তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করেছে। তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। তাসত্ত্বেও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছাড়া কীভাবে তপস্যার অনুমতি মিলল তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাবা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর আশেপাশে কোন অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়নি। প্রায় আধ ঘণ্টা পর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই। উল্লেখ্য, ‘পঞ্চ-অগ্নি তপস্যা’র কথা উল্লেখ রয়েছে প্রাচীন হিন্দু ধর্মগ্রন্থ যেমন পদ্ম পুরাণ এবং শিব পুরাণে।