করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ধুঁকছে দেশের বেশ কয়েকটি শহর। বেড়েই চলেছে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা। দিল্লি, মহারাষ্ট্রের মতো শহরে সংক্রমণ যেন আটকানো যাচ্ছে না। সেই পরিস্থিতিতেও টিকা তৈরির কাঁচামাল রফতানি না করায় সমালোচনার মুখে পড়েছিল আমেরিকা। অবশেষে ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুল্লিভানফোনে কথা বললেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে। তিনি ভারতের করোনা পরিস্থিতির উপর সমবেদনা জানিয়ে আশ্বস্ত করেছেন যে, বিশ্বের এই দুটি করোনায় আক্রান্ত দেশকে একজোট হয়ে ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বিগত সত্তর দশক ধরে ভারত—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর দিক দিয়ে যে সমন্বয় চলে আসছে, তা করোনা মহামারির ক্ষেত্রেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গতবছরের কোরোনা পরিস্থিতিতে ভারত যেভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়িয়েছিল, ঠিক একইভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এবার ভারতের এই কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
সেই মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাঁদের উপলব্ধ সংস্থান এবং সরবরাহ ভারতের দিকে এগিয়ে দিতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কোভিশিল্ড তৈরিতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যত দ্রুত সম্ভব ভারতের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁরা, যাতে এই টিকা তৈরি করে রোগীদের পাশাপাশি প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের দেওয়া যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে চলেছে মার্কিন মুলুক।
করোনার টিকা তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামাল ছাড়াও, করোনা পরীক্ষার কিট, ভেন্টিলেটর, পিপিই কিট ছাড়াও অক্সিজেন তৈরিতে ব্যবহৃত সরঞ্জাম সরবরাহ করতে উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে ‘ইউএস ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স কর্পোরেশন’ (ইউএসডিএফসি) প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করবে, যাতে এই সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে দ্রুত ভ্যাকসিনের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে পারে ভারত।
২০২২ সালের মধ্যে যাতে ১ বিলিয়ন ডোজ করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম হয় ভারত, সেই লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত উপদেষ্টাদের একটি দল গঠন করার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। যে দল মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে যৌথভাবে সমন্বয় গড়ে তুলে কাজ করবে। একইসঙ্গে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও গোয়েন্দা বিভাগের কর্মীরা মার্কিন এই বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে সমন্বয় রেখে যত দ্রুত সম্ভব জরুরি সংস্থানগুলো গ্লোবাল ফান্ডের মাধ্যমে দেশে উপলব্ধ করার ক্ষেত্রে কাজ করবে। এই দুই রাষ্ট্রের জাতীয় উপদেষ্টা আগামিদিনে একত্রে কাজ করতে বদ্ধপরিকর হয়েছেন।