বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য এর আগে কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছিলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিনের বাংলায় বা কলকাতায় ফেরার ক্ষেত্রে কোনও বাধা রয়েছে কি না। তবে এবার ভারত সরকারের তরফে কার্যত জানানো হয়েছে তসলিমার পশ্চিমবঙ্গে বা কলকাতায় ফেরার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই।
আনন্দবাজার ডট কমের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, শুক্রবার শমীক ভট্টাচার্যের হাতে কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো চিঠি এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আমরা আপনার উদ্বেগ সম্পর্কে অবহিত হয়েছি। আপনাকে জানাতে চাই তসলিমা নাসরিনকে উপযুক্ত শ্রেণি তথা সময়সীমার ভারতীয় ভিসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমান বিধি শর্ত মেনে তিনি ভারতের যে কোনও স্থানে যেতেই পারেন।
সেক্ষেত্রে এই চিঠি অনুসারে তসলিমা নাসরিনের বাংলায় বা কলকাতায় আসার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকার কথা নয়।
ওই প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে এই চিঠি পাওয়ার পরে শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তসলিমা একজন বাঙালি লেখিকা। তিনি বাংলায় লেখেন। তাঁর পাঠকেরা বাঙালি। তাঁকে বছরের পর বছর ধরে বাংলা থেকে দূরে থাকতে বাধ্য করা হবে কেন? যাঁদের জন্য লেখেন তাঁদের মাঝে কেন বাঁচতে পারবেন না? আমি এই প্রশ্নই রাজ্যসভায় তুলেছিলাম। ভারত সরকারকে ধন্য়বাদ। তাঁরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল তসলিমার কলকাতায় ফেরার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই।
রাজ্যসভায় ঠিক কী উল্লেখ করেছিলেন শমীক ভট্টাচার্য?
সেই সময় তিনি বলেছিলেন, 'পরিস্থিতির জেরে বাধ্য় হয়ে তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশ ত্য়াগ করেছিলেন। তিনি কলকাতায় আসেন। আর সেই সময় তৎকালীন এক কংগ্রেস নেতা তাঁর বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সময় কংগ্রেস তাঁকে( সেই নেতাকে) বহিষ্কার করেছিল। এরপর তৃণমূল তাঁকে নিয়ে নেয়।…এরপর পরিস্থিতির জেরে তসলিমা কলকাতা ছাড়তে বাধ্য় হন।'
শমীক বলেছিলেন, 'তসলিমার কাছে কলকাতা প্রাণের শহর। তিনি কলকাতায় ফিরে আসতে চান। বাংলায় কথা বলতে চান। বাংলায় কবিতা লিখতে চান। বাংলায় ছদ্ম প্রগতিশীলতার আড়ালে চূড়ান্ত তোষণ, মৌলবাদের কাছে আত্মসমর্পণের দিন শেষ হোক। তসলিমার প্রত্যাবর্তন হোক।'
কী বলছেন তসলিমা নাসরিন?
আনন্দবাজার ডট কমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘ভিসা বলুন বা রেসিডেন্ট পারমিট আমাকে যেটা দেওয়া হয়েছে সত্যি তাতে ভারতের কোথাও যেতে বাধা নেই। আমি রাজস্থান, তামিলনাড়ু, কেরল, ওড়িশা যাচ্ছি।' তিনি কলকাতায় যাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ’আমার কি যেতে ইচ্ছে করে না? কলকাতা বইমেলায় আমার বই বের হয়। পাঠকেরা আমার বই কেনেন। তাঁদের মাঝে গিয়ে সময় কাটাতে আমার খুব ইচ্ছে করে। কিন্তু আমি যাওয়ার পরে যদি কেউ কিছু ঘটান তাতে মুখ্য়মন্ত্রী যদি কোনও পদক্ষেপ করেন, তাহলে কী হতে পারে আমি নিশ্চিত নই। তাই যাচ্ছি না।'