শেষবার হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। তারপর থেকে কেন্দ্রের কোনও জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় শুধুমাত্র একটি দলের মন্ত্রী ছিল না। রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যুর পর এনডিএ সরকারে সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রত্যেক সদস্যই বিজেপির। আর ৫১ জন মন্ত্রীর মধ্যে মাত্র একজন অবিজেপি সদস্য আছেন - রামদাস আথাওয়ালে।
২০১৯ সালে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা-সহ কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফেরে এনডিএ। যে জোটে দেশজুড়ে ২৪ টি রাজনৈতিক দল আছে। বিজেপির জোটদলগুলি থেকে মাত্র তিনজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পান। ভারী শিল্পের মন্ত্রী হয়েছিলেন শিবসেনার আনন্দ গীতে, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন হরসিমরত কৌর বাদল (অকালি শিরোমণি দল) এবং ক্রেতা বিষয়ক মন্ত্রী হয়েছিলেন রামবিলাস পাসোয়ান (লোক জনশক্তি পার্টি - এলজেপি)।
গত বছর মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল শিবসেনা। সেই সময় পদত্যাগ করেছিলেন গীতে। গত মাসে আবার কৃষি বিলের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ছাড়েন হরসিমরত। তারপর মন্ত্রিসভার একমাত্র অবিজেপি সদস্য ছিলেন রামবিলাস পাসোয়ান। কিন্তু দীর্ঘদিন অসুস্থতার পর গত বৃহস্পতিবার প্রয়াত হন তিনি।
তারপরই দ্বিতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদল নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। একটি মহলের ধারণা, রামবিলাস পাসোয়ানের পরিবর্তে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে পারেন তাঁর ছেলে চিরাগ। যদিও বিহার ভোটে এলজেপি একা প্রতিদ্বন্দ্বিতার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় খুব একটা মসৃণ হবে না সেই কাজটা। অপর একটি অংশের ধারণা, এমনিতেও জোটসঙ্গীদের খুব একটা ভ্রূক্ষেপ করে না বিজেপি।
সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের গবেষক রাহুল বর্মা জানান, বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার গঠনেই এনডিএর পরিবর্তিত বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠছে। তিনি বলেন, 'বিজেপি নেতৃত্বের মতে, ছোটো জোটসঙ্গী মোদীর জনপ্রিয়তার ফায়দা তুলেছে। কিন্তু নিজেদের ভোট মজবুত করতে পারেনি। তাই মন্ত্রিত্বের ক্ষেত্রে সেই দলগুলিকে একঘরে করে দেওয়া হচ্ছে। যা সেই ছোটো দলগুলির মধ্যে গভীর নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করছে।' তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় হাতেগোনা কয়েকজন সদস্য আছেন, যাঁরা একাধিক রাজ্য ও সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয়।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের মতে, কোনও মতাদর্শ বা কর্মসূচি ভিত্তিক অনুষ্ঠানের ভিত্তিতে জোট করে না বিজেপি। গেরুয়া শিবির শুধু দেখে কোনও দলে জোটে যুক্ত হলে বিজেপির ফায়দা হবে কিনা। তাঁর কথায়, 'যদি কিছু লাভের আশা থাকে, তবেই ওদের (বিজেপি) জোটসঙ্গীর প্রয়োজন হয় বা জোটে যোগদানের দরকার হয়। যদি বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা বেশি হয়, তাহলে জোটসঙ্গীরা আসবে, যদি কম হয়, তাহলে আসবে না। ২০১৪ সাল থেকে শুধুমাত্র নামেই এনডিএ-এর অস্তিত্ব আছে।'