বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তবে তাঁর জমানায় নানা অত্যাচার করা হত বলে ইতিমধ্যেই একাধিক বিএনপি নেতা মুখ খুলেছিলেন। সেই সঙ্গে হাসিনার আমলে আয়নাঘর ছিল বলেও দাবি করা হয়েছে। সেটা নাকি গোপন বন্দিশালা! তবে এবার তা নিয়ে মুখ খুলল RAB।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে RAB-এর মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিক বৈঠকে RAB-এর মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান বলেন, RAB সৃষ্টির পর থেকে যে জনসাধারণ RAB সদস্যদের দ্বারা নির্যাতিত, অত্যাচারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের কাছে, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ যাঁরা RAB-এর দ্বারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন তাঁদের পরিবারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি। ক্ষমা প্রার্থনা করছি। জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি আমি যতদিন দায়িত্ব পালন করব, আমার এই কর্মকর্তারা যাঁরা দায়িত্বে আছেন তাঁরা কখনও কারও নির্দেশে গুমখুনের মতো ফৌজদারি অপরাধে জড়িত হবে না। RAB সদস্যদের দ্বারা নির্যাতন ও অত্যাচারের মতো ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যেন বিচার হয় সেটা আমরা প্রত্যাশা করি।
সেই সঙ্গেই বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক করে তিনি বলেন,যদি কোনও সদস্য নিজ দায়িত্বে কোনও ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত হয় তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেব। যেটা ৫ অগস্ট পরবর্তী সময়ে আমরা নিয়ে আসছি।
এবার প্রশ্ন আয়নাঘর কি বাস্তবে ছিল?
সেই প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন তিনি। ওই প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে, তিনি জানিয়েছেন,' RAB-এ আয়নাঘরের যে বিষয়টি এসেছে সেটি ছিল, আছে। কমিশন আমাদের নির্দেশ দিয়েছে যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় রাখার জন্য। কোথাও কোনও পরিবর্তন বা পরিবর্ধন যেন না করা হয়, যেভাবে ছিল সেগুলো আমরা ওইভাবে রেখেছি।' কার্যত আয়নাঘর যে ছিল সেটা সরাসরি জানিয়ে দিলেন ওই পদস্থ কর্তা।
এদিকে বিগত দিনে এই আয়নাঘর নিয়ে নানা রিপোর্ট সামনে এসেছিল।
সূত্রের খবর, ২০০৯ সাল থেকে শুরু হয়েছিল শেখ হাসিনার জমানা। সেই সময় থেকেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হত। শাসকের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই তুলে আনা হত বলে খবর।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর অনুসারে জানা গিয়েছিল, অনেককেই বিগত দিনে তুলে এনে গুম করে ফেলা হত। তাদের দেহের সন্ধান মিলত না। অন্যদেরকে একটি গোপন মিলিটারি ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হত। এটার নাম ছিল আয়নাঘর। মানে হাউজ অফ মিররস।
কাদের রাখা হত এই আয়নাঘরে?
মূলত হাসিনার শাসনকালে যারা তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলতেন তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হত। আইনজীবী থেকে আদিবাসী নেতা, যারাই হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলতেন তাদেরকেই নিশানা করত তৎকালীন সরকার। এদিকে আচমকাই সেই প্রতিবাদীদের আর সন্ধান মিলত না। কার্যত উবে যেতেন তারা। একাধিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল।