প্রথমে পায়রার মাধ্যমে ফিল্মি কায়দায় বাড়িতে নজরদারি। আর তারপরে পায়রা ধরার নাম করে চুরি। একটি চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। চোরের এরকম অভিনব পন্থায় চুরির কাণ্ডে কার্যত হতবাক পুলিশ। ঘটনাটি বেঙ্গালুরুর। জানা গিয়েছে , পায়রার ব্যবহার করে কমপক্ষে শহরের ৫০ টি বাড়িতে চুরি করেছে ওই চোর। এমন বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে । এই ঘটনা চুরির উপরে অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম মঞ্জুনাথ ওরফে পরিভালা মাঞ্জা। তার কাছ থেকে বেশ কিছু সোনার গহনা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: কাজের প্রলোভনে ভারতে এনে বের করে নেওয়া হল কিডনি, নিষ্ঠুরতার শিকার ৩ বাংলাদেশি
চুরির জন্য কীভাবে কাজে লাগানো হত পায়রা?
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দুটি পায়রার শরীরে ছোট ছোট ক্যামেরা ফিট করে দিয়ে বাড়ির উপর নজরদারি চালাতো। পায়রাগুলি ছেড়ে দিয়ে বাড়ির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখত সে। তারপরে সেখানে চুরির অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ত মঞ্জু। জানা গিয়েছে, এভাবে প্রায় পঞ্চাশটিরও বেশি বাড়িতে চুরি করেছিল ওই যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, মূলত দুটি পায়রা নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিত যুবক। এরপর বাড়িতে কেউ আছে কি না বা তালা বন্ধ রয়েছে কি না তা পায়রার শরীরে লাগানো ক্যামেরার মাধ্যমে ভালো করে দেখে নিত। আর একবার বাড়ি ফাঁকা দেখতে পেলেই সে বারান্দা বা বাড়ির ছাদে উঠে পড়ত। কেউ জিজ্ঞেস করলেই বলে দিত যে পায়রা ধরতে যাচ্ছে সে। তাতে তার ওপর মানুষের সন্দেহ হত না।
আর তারপরেই চলত অপারেশন। ফাঁকা বাড়ি দেখে দরজা ভেঙে সোনার গয়না নগদ টাকা সহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যেত সে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ লক্ষ টাকারও বেশি সোনার গহনা ও টাকা যুবক চুরি করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। এছাড়া তার কাছ থেকে একটি স্কুটার উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে , অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার জন্য এর আগেও বেশ কয়েকবার মঞ্জুকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। কিন্তু, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই আবার অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
সম্প্রতি সিটি মার্কেট এলাকায় বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ মঞ্জুরকে গ্রেফতার করে। তার গ্রেফতারের ফলে স্থানীয়রা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, যে মঞ্জু একাই চুরি করে বেড়াত। তার সঙ্গে আর কেউ ছিল না। চুরির পর সেই মূল্যবান জিনিসপত্র শহরে যেখানে বাস করত সেখানে রেখে দিত সে। সাধারণত দিনের বেলায় চুরি করত মঞ্জু। তার কাছ থেকে একাধিক জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।